মনকাহন তৃতীয় খণ্ড আমরা বোধয় নিজেকেই সবচেয়ে কম জানি, অথচ খুব সহজেই অন্যের সম্বন্ধে মতামত জাহির করি। আমাদের নিজেদের আচরণ কেমন, আমাদের ব্যক্তিত্বের মাঝে কোনও ধরণের অস্বাভাবিকতা আছে কিনা এ বিষয়ে সচেতনতাবোধ খুব কম মানুষের মাঝে আছে। ডিপ্রেশন, সন্দেহ প্রবণতা, পরশ্রীকাতরতা, অলসতা, অনিদ্রা জনিত সমস্যা, নানা ধরণের উদ্বেগ ও আতংক, স্বল্পমাত্রার শুচিবায়ুতা এমন ধরণের সমস্যায় আমরা সবাই হয়ত কমবেশি অনুভব করি। বেশিরভাগ সময় এমন আচরণ করি আমরা যখন কোনও বিষয় নিয়ে মানসিকভাবে দোলাচলে ভুগি। অন্যদিকে প্রিয়জনের অকাল মৃত্যু, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, যুদ্ধবিগ্রহ, হিংসাত্মক হামলা, মানসিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া বা প্রলয়ংকারি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হওয়ার মত দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে। মানসিক ক্ষত সামাল দেয়ার ক্ষমতা প্রতিটি মানুষের জন্য সমান নয়, তাই অনেক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা পরবর্তীতে জটিল মানসিক ব্যাধির শিকার হওয়ার যথেষ্ট সম্ভবনা থাকে। আবার এমন কিছু অস্বাভাবিক আচরণ আছে যা সম্ভবত জন্মসূত্রে পাওয়া মানসিক কোনও রোগের কারণে সৃষ্টি হয়। যদি কেউ অনুভব করেন যে তিনি বেশকিছু ধরে এমন কিছু মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, যাতে তার দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক কাজকর্ম প্রচুর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, তাহলে দ্রুত অভিজ্ঞ একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। মানসিক চিকিৎসকের দেয়া ওষুধ এবং কাউন্সেলিং সাইকোলজিষ্টের পরামর্শ সুনির্দিষ্টভাবে মেনে চালার যেমন জরুরি, তার পাশাপাশি নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং বর্তমান মানসিক পরিস্থিতির সাথে খাপখাইয়ে চলাটা মানসিক রোগের শিকার ব্যক্তির জন্য একান্ত আবশ্যক। যে কোনও লক্ষ্যে পৌঁছানোর, মানুষ হিসাবে স্বনির্ভর হবার এবং জীবনের সার্বিক উন্নতি করার সবচাইতে উৎকৃষ্ট প্রেরণা হচ্ছে নিজেকে অনুপ্রেরিত করা। আপনি নিজেকে যখন অনুপ্রেরণা যোগাতে শিখবেন, আপনার আত্মবিশ্বাস আপনাকে পৌঁছে দেবে আপনার লক্ষ্যে। নিজেকে জানুন জীবনকে নূতন করে উপভোগ্য করে তুলুন!