সুজন বড়ুয়া রচিত মুক্তিযুদ্ধের চারটি ভিন্নস্বাদের কিশোর-উপন্যাস নিয়ে এই গ্রন্থ। প্রথম উপন্যাস বন-পাহাড়ের আমি’র কেন্দ্রীয় চরিত্র একটি হাতি। মায়ানমারের আরাকান পাহাড় থেকে নাফ নদী পার হয়ে টেকনাফে এসে মানুষের হাতে ধরা পড়ে হাতিটি। জীবনের নানা পালাবদলের মধ্য দিয়ে হাতিটি জড়িয়ে যায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে; হয় মানুষের সহযোগী। অপূর্ব চমকপ্রদ সেই আখ্যান হাতি নিজেই বলে যায় উপন্যাসে। দ্বিতীয় উপন্যাস সূর্য ওঠার সময়। বাঙালির জাতীয় ইতিহাসের অবিস্মরণীয় বছর ১৯৭১। ভয়াবহ কালোময়, আবার ততোধিক আলোয় সেই সময়ে উত্তর চট্টগ্রামের এক নিভৃত জনপদের বৌদ্ধ-হিন্দু-মুসলিম তিন সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির বন্ধন এই উপন্যাসের প্রধান অনুষঙ্গ। তিন সম্প্রদায়ের তিন বন্ধুর মুক্তিযুদ্ধকালীন জীবনধারা এখানে পেয়েছে আশ্চর্য সুন্দর ব্যঞ্জনা। তৃতীয় উপন্যাস আলো ফুটবেই। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র বৌদ্ধ কিশোর রাতুল। তার সহপাঠী বন্ধু খোরশেদ রাজাকার-পুত্র। রাতুলের সংস্পর্শে বিবেকের তাড়নায় ক্রমে বদলে গিয়ে খোরশেদ পিতাসহ পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সেই অশ্রুতপূর্ব ঘটনার অসামান্য গল্পভাষ্য এই উপন্যাস। চতুর্থ উপন্যাস আকাশ ছোঁয়া বীর। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মহাজীবনের রূপকথাসম মর্মস্পর্শী, মানবিক ও বীরত্বপূর্ণ ঘটনাধারা নিয়ে এই উপন্যাস। নন্দিত সাহিত্য-শিল্পী সুজন বড়ুয়ার মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চারটি অনুপম কিশোর-উপন্যাস একই মলাটে বদ্ধ হলো এই গ্রন্থে। গ্রন্থটি সব বয়সের পাঠককে বিস্ময়াভিভূত করবে।
জন্ম : ১৮ এপ্রিল ১৯৫৯, জন্মস্থান : সিলোনীয়া, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম। শিক্ষা : ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর (১৯৮৩), কর্মজীবন : বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর প্রকাশনা বিভাগে কর্মরত।