উত্তর ভারতে আসা বহিরাগত আর্যরে সঙ্গে দক্ষিণ ভারতে বসবাসকারী মূল নিবাসী দ্রাবিড়দের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের ঘটনা বিধৃত আছে রামায়ণ—মহাভারতে। উত্তর ভারতের মানুষেরা রাক্ষস অসুর ইত্যাি নেতিবাচক শব্দে দ্রাবিড়দের হেয় করার পাশাপাশি নিজেদের উচ্চবর্ণজাত বলে দাবি করে এবং একই সঙ্গে তাদের ওপর সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সর্বোপরি সাংস্কৃতিক আধিপত্য কায়েম করেছে বলে মাদ্রাজ সেকুলার সোসাইটির অভিমত। তামিল ভাষা রক্ষাের্, অচ্ছুৎ ও অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে, শূদ্রত্ব ঘোচাতে, নারী অধিকার সমুন্নত রাখতে দ্রাবিড় কাজাগমের প্রতিষ্ঠাতা পেরিয়ার ই ভি রামাস্বামী সম্পূর্ণ প্রতিকূল পরিবেশে সংগ্রাম করে গেছেন সারা জীবন। তিনি তামিল ভাষার মর্যাদা, ঐতিহ্য ও ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষাের্ এবং তামিল জাতিসত্তা সংরক্ষণার্থে আজীবন সংগ্রাম করে তাঁর জাতিকে নব উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। যার ফলে তাঁরই নেতৃত্বে তামিল জনগোষ্ঠি ভারত বর্ষে তথা দক্ষিণ এশিয়ায় বিশেষ অগ্রসরমান জাতি গোষ্ঠিতে পরিণত হয়েছে। একইভাবে আমরা বাংলাদেশী মানুষরাও বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতিসত্তার মর্যাদা সংরক্ষণে সংগ্রাম করে জয়ী হয়েছি। আমাদের জাতীয় সংগ্রামের সমান্তরাল ধারার ঐতিহ্য ধরা পড়েছে ই ভি রামাস্বামী ও তাঁর অনুসারীদের সংগ্রাম সাধনায়। আমরা বাংলা ভাষায় তেমন একজন আইকনকে প্রথমবারের মত পাঠকদের কাছে উপস্থাপন করছি। নিবিষ্ট লেখক ও গবেষক জয়নাল হোসেন দ্রাবিড় আন্দোলনের জনক ও তামিল ভাষাসংগ্রামী পেরিয়ার ই ভি রামাস্বামী গ্রন্থে রামাস্বামীর সংগ্রামী জীবনের বিশেষ দিক কৌতূহলী পাঠকের সামনে এক ভিন্ন মাত্রায় তুলে ধরেছেন।
Title
দ্রাবিড় আন্দোলনের জনক ও তামিল ভাষাসংগ্রামী : পেরিয়ার ই ভি রামাস্বামী
Jaynal Hossain- একজন কৃষিবিদ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। কুমিল্লার মুরাদনগরের কুড়েরপাড় গ্রামে ১৯৫৩ সালের ১১ই আগস্ট তাঁর জন্ম। পিতা তালেব হোসেন, মাতা মাফেজা খাতুন। বাঙ্গরা উমালোচন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে এসএসসি, শ্রীকাইল কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে এইচএসসি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে ১৯৭৭ সালে কৃষি অনুষদ থেকে ডিগ্রি নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। চাকরিকালে থাইল্যান্ডের মহিডোল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অভ নিউট্রিশন থেকে পুষ্টির ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন। তিনি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ এর জীবন সদস্য এবং বাংলাদেশস্থ জাতিসংঘ সমিতির সদস্য। তাঁর রচিত বই: মুর্শিদাবাদ থেকে মধুপুর (২০০০), প্রমিত দৃষ্টিপাত (২০০১), সমুদ্রনন্দিনী কুতুবদিয়া: ইতিহাস ও বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত (২০০২), ঠাকুর শম্ভুচাঁদ (২০০৩), শৈলসমুদ্র সান্নিধ্যে (২০০৩), মেঘের মায়াবী চোখ (২০০৭), রাজা ভাওয়াল সন্ন্যাস ও ভাওয়াল পরগনা (২০০৯), পুণ্যের ঘরে শূন্য দিয়ে: ব্যতিক্রমী আট (২০১২), ধীরাজ ভট্টাচার্য ও তাঁর প্রেম উপাখ্যান: মাথিনের কূপ (২০১২), মানবপুত্র গৌতম: ধর্ম ও জীবনাচার (২০১৩), উইলে চার টাকা দুই আনা: সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভিতর-বাহির (২০১৩), প্রাঙ্গণে মোর: টোকা ডায়েরির পাতা থেকে (২০১৪)