খোদেজা কান্না মুখে কইল, 'আমি আপনার লাইগা কিছুই করতে পারি না। আপনার কোনো কাজেই আসি না। এতো কিছুর চিন্তা আপনে একা করেন। আমি খালি রান্না কইরা খাওয়াই। আমার বাপ মইরা যাওনের পর তো, ভাইয়েরা ফিরাও তাকাইল না। চইলা গেছে একেবারে। বোনডা বাইচা আছে নাকি মইরা গেছে একবার খোঁজ নিয়াও দেখল না৷' অলী খোদেজার হাত ধইরা কইল, 'তুমি আমার লগে আছো এইডাই অনেক। এত কষ্ট কইরা কে থাহে৷ ভালো একটা কিছু দিবার পারি না৷ সারাদিন এইডা নাই, ওইডা নাই। তাও তুমি কোনো কিছু কউ না৷ চুপচাপ খেত থাইকা শাক তুইলা আইনা ভর্তা কইরা খাওয়ায়। বিয়ার পর থাইকা তোমারে চিন্তা ছাড়া আর কি দিবার পারলাম?' 'মিছা কথা কইয়েন না। পুরান বাড়িতে ভালোই আছিলাম। আব্বায় যহন বাইচা আছিলো তহন আমরা ভালোই আছিলাম।' 'হু। ছাওয়াল-মাইয়ার লাইগা বাপ-মার বাইচা থাকুন যে কত বেশি দরকার তা অহন বুঝতাছি। যেই দিকে যাই মানুষ খালি কথা শুনায়৷ মাথার উপর বট গাছ থাকলে আর এতো বেশি কথা শুনাইতে পারত না৷' 'আমি তো আপনার লাইগা কিছুই করতে পারি নাই। বিয়ার পর থাইকা নদীর কাছ দিয়া হওয়া শ্যাওলার লাহান লাইগা আছি আপনার জীবনে। কোনো কাজের না৷' অলী খোদেজার হাত ধইরা কইল, 'আমার জীবনে এই শ্যাওলাই মেলা বেশি। এর চাইতে বেশি কিছু আশাও করি নাই জীবনে৷ আল্লাহর কাছে তাই শুকরিয়া করি মাঝেমইধ্যে, আমারে আর কিছু দিক না দিক, আল্লাহ আমারে একটা বউ দিছে। একটা ভালো মনের মানুষ দিছে। যারে নিয়া সারাজীবন সংসার করুন যায় সবকিছু ভুইলা থাইকা। আল্লাহ আমারে একটা নদীর পাড়ের শ্যাওলা ফুল দিছে। যার লাইগা অহনো আমি বাইচা আছি।'
পৃথিবীর কষ্ট বোঝার জন্য লেখকদের সংগ্রামের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। আগুনে পুড়ে,পুড়ে পরিণত হয়েই একজন লেখক মানুষের অনুভূতিগুলোতে আটকে দিতে পারে শব্দের বুননে। দুঃখই লেখকের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণার জায়গা। লেখক আব্দুল্লাহ আল মামুনের কষ্টের সাথে সুসম্পর্ক। জীবনের চোরা গলিতে ছুটতে ছুটতে কালো আর আলোকে চেনা সহজ হয়ে উঠেছে তার জন্য। নাটক, সিনেমার চিত্রনাট্য , গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, সমসাময়িক ও গ্লোবাল বিষয় নিয়ে কলাম লিখে আর বাংলাদেশ টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘ সময় সহকারী, প্রধান সহকারী পরিচালক ও এসোসিয়েট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করে এর মাঝেই পরিচিত হয়ে উঠেছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। বর্তমানে তিনি পিয়ানো কোম্পানির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে আছেন। পাশাপাশি স্টার্টআপ বিজনেস নিয়ে তার ভাবনা অতুলনীয়। একজন তরুণ উদ্যোক্তা। লেখক পরিচিতি লেখকের ভাষ্যমতে এমন — ' ছোট ছোট শব্দ জোড়াতালি দিয়ে বিক্রি করে লাখপতি হয়েছি। খুব দ্রুত যেন কোটিতে পা দিতে পারি সেই দোয়া রাখবেন। ' ' আমি শব্দ বিক্রি করে খাই, মানুষ না। '