ফ্ল্যাপ: ঘর থেকে উঠোনে নামতে গিয়ে হঠাৎ রসুইঘরের পৈঠা বরাবর, যার কোলঘেঁষে রাখা আছে বাইরের পানির কলসটা, যার পাশেই ভাঙা কাঁসার ওপর পড়ে আছে রাতের বাসী বাসনকোসন মাজার কালিমাখা ন্যাতাটা, আর পড়ে আছে একটা ভাঙা ডিমের খোসা, ঠিক সেই জায়গায় ফুলটা চোখে পড়ল ফিরোজার! ঠিক কী ফুল সে চিনতে পারল না বটে, তবে তার রং-রূপ এতই বাহারি যে, সেদিকে চোখ পড়ামাত্র এক দৌড়ে তার কাছে ছুটে আসতে বাধ্য হলো। কোনো গাছ নাই, কোনো ঝোপঝাড় নাই, হাতমুখ ধোয়ার জায়গা হিসেবে নিয়মিত চোখের সামনে ভিজে স্যাঁতস্যাতে হয়ে থাকা মাটি ফেটে বেরিয়েছে শুধুই একটা ফুলের ডাঁটি। ডাঁটির মাথায় পিতল বর্ণের ফুল! শ্যাঁওলার স্তর জমা সবুজাভ মাটি ফেটে বেরোনো ফুলের গন্ধটা যেমন তীব্র, তেমনই ঝাঁঝালো। অনেকটা মন্ত্রমুগ্ধের মতো চারপাশে ছড়িয়ে পড়া তীব্র ঝাঁঝালো ঘ্রাণ উপেক্ষা করেই ফুলের সামনে এসে বসে পড়ল ফিরোজা। একটিমাত্র ফুল দেখে এগিয়ে এসেছিল সে। এসে বসতে বসতে তার পাশ দিয়ে গজিয়ে উঠলো আরো তিনটা ফুলের ডাঁটি! তারপর আরো তিনটা! উঠতেই থাকলো! দেখতে দেখতে যেখানটায় বসেছে ফিরোজা, তার চারপাশ ভরে উঠলো অজস্র পিতলবর্ণের ফুলে! ফুলগুলোর কোনো একটা হঠাৎ যেন তাকে ডেকে উঠলো- ‘মা!’
২৯ ডিসেম্বর, ১৯৮৬ নাটোরের বড়াইগ্রামে জন্ম । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা কালে যুক্ত হন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে। মঞ্চাভিনয়, নাট্য রচনা ও নাট্য নির্দেশনায় প্রশংসিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিমন্ডলে। উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা নাটকসহ লেখালেখির সব মাধ্যমেই সরব তিনি। জীবনের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে থাকা অজস্র গল্পগুলোকে নিজের ঢঙে তুলে আনতে তিনি সিদ্ধহস্ত।