চেনা মানুষ ও জনপদ অচেনা হয়ে ওঠে। পরিচিত বাস্তব ভেঙে নির্মিত হয় পরাবাস্তব এবং জাদুবাস্তব জগৎ । সেখানে প্রকৃতি আর মানুষ, বস্তু এবং সজীব প্রাণ একাকার। ফলে গল্প বলবার ঢং সম্পূর্ণ বদলে গেছে। একদিকে ভাষার নন্দন, অন্যদিকে শিল্পকলার বিভিন্ন প্রণালি এসব গল্পে খেলা করে। কখনো সংগীতময়তা, কখনো চিত্রকলা । কখনো রঙের বিন্যাস, কখনো মনোজগতের সূক্ষ্ম অনুভূতি। বদলে গেছে প্রবহমান সময়ের ধারণা। কাল সেখানে নিরন্তর আবর্তিত। এভাবেই এই বইয়ের গল্পগুলোর বুনন। খুব সহজ নয় এমন গল্পের অনুরাগী হয়ে ওঠা। সেজন্য পাঠকের দরকার হবে প্রস্তুতি । বইয়ের মাঝখানে একটি পৃষ্ঠা। একটি নিঃসঙ্গ শব্দ সেখানে । ট্রাভেলগ। তারপর দুটো গল্প। তাতে গল্পের ভ্রমণ যেন অনিঃশেষ । তবে কেবল নন্দন বা সৌন্দর্য সৃষ্টিই নয়। পাঁচটি গল্পে ভেঙে পড়া সমাজ ও মানুষ নিসর্গের মতোই পারস্পরিক। সমস্ত ভাঙন আর দরগলমান রক্ত রুখে দেওয়া দুঃসাহসিক প্রকৃতি হাত ধরাধরি করে চলে। হারিয়ে যাওয়া ভোর আর মৃত বৃক্ষ এসব গল্পে কথা বলে অস্ফুটে। শুকনো পাতাও সেখানে যেন প্রাণস্পন্দময়। সবকিছু ছাপিয়ে গল্পের ভাষা। যেন জাদু। যেন ছুঁয়ে যাবে নৈর্ব্যক্তিক শরীর। অন্তর্গত রক্তের ভিতরে জলের মতো ঘুরে ঘুরে খেলা করে । এই তবে। আসুন । ভ্রমণ করা যাক এইসব গল্পের ভুবনে । গোলাপ ও গ্রামের স্মরণে। বিহঙ্গ ও বিকেলের নামে। সোনালি খড় ও ছেঁড়া কাগজের স্মৃতি উন্মোচনে ।