১৫১১ সাল। আটলান্টিকের বুকে তখন দাপিয়ে বেড়াতো পর্তুগিজদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ “ফ্লোর দে লা মার”। মালাক্কার রাজপ্রাসাদ লুট করে সেনাপতি আলবুকার্ক সেই জাহাজে করে প্রায় ষাট টন স্বর্ণ, হিরা, জহরত, মণি, মাণিক্য নিয়ে পর্তুগালের উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলেন। কিন্তু পথিমধ্যে সমুদ্র ঝড়ে ডুবে যায় “সমুদ্র ফুল” নামে খ্যাত জাহাজটি। এই ঘটনার পর অনেক তল্লাশি করেও জানা যায় নি সমুদ্রের বুকে ঠিক কোথায় ঘুমিয়ে আছে “ফ্লোর দে লা মার”। অবশ্য সমুদ্রে জাহাজ ডুবে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা কিন্তু এর দুই বছর পর যে ঘটনা ঘটে তার ব্যাখা হয়তো স্বাভাবিকভাবে দেওয়া অসম্ভব। জাহাজ ডুবে যাওয়ার পর অল্প কিছু নাবিক সাঁতরে তীরে এসে নিজেদের জীবন বাঁচাতে পেরেছিলো। তাদের মধ্যে আলফোনসো নামের একজন নাবিক ছিল। জাহাজডুবির দুই বছর পর সে অন্য এক জাহাজে করে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আটলান্টিক মহাসাগরে যাত্রা করে। এক গভীর রাতে জাহাজের সবাই যখন ঘুমাচ্ছিলো আলফোনসো তখন ডেকে দাঁড়িয়ে রাতের সমুদ্র দেখছিলো। হঠাৎ ও খেয়াল করলো মাঝ সমুদ্রে একটা জাহাজ নোঙর করা। কৌতূহল বশত একাই নৌকা নিয়ে সে নিজের জাহাজ থেকে ঐ জাহাজে গেল। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য জাহাজে কোনো মানুষ ছিল না। জনমানবহীন একটা জাহাজ মাঝ সমুদ্রে কীভাবে আসলো এটা ভাবতে ভাবতেই আলফোনসোকে অবাক করে দিয়ে জাহাজটি নিজেই চলতে শুরু করলো। আলফোনসোও তখন অজানা কোনো কারণে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লো। যখন ওর ঘুম ভাঙ্গলো তখন ও নিজেকে অচেনা এক দ্বীপের পাহাড়ের গুহায় আবিষ্কার করলো। কিন্তু অবিশ্বাস্য ব্যাপার হল তার সামনেই ছিল দুই বছর আগে ডুবে যাওয়া জাহাজ “ফ্লোর দে লা মার”। আর সেই দ্বীপটি ছিলো অদ্ভুত দেখতে কঙ্কালসার দানবের দ্বীপ। কীভাবে আলফোনসো এখানে আসলো? ডুবন্ত জাহাজই বা এখানে কী করে আসলো? তারপর বহু বছর পেরিয়ে গেল। যুগ যুগ ধরে গুপ্তধন শিকারী, নাবিক, জলদস্যুরা “ফ্লোর দে লা মার” জাহাজের সেই ধন সম্পদ খোঁজার চেষ্টা করলো। কিন্তু কেউ-ই খুঁজে বের করতে পারলো না সেই রহস্যময়, দ্বীপ, গুহা কিংবা জাহাজ। শেষে ক্যাপ্টেন কিডস তার প্রিয় ‘দ্য ব্রিকো’ জাহাজ নিয়ে বেরিয়ে পড়লো “ফ্লোর দে লা মার” জাহাজের গুপ্তধনের সন্ধানে। যাত্রায় তার সঙ্গী হলো পাবন। সমুদ্র ঝড়, সমুদ্র দানব, আটলান্টিকের বরফের দ্বীপের বিপত্তি সব অতিক্রম করে ওরা কী এই রোমাঞ্চকর সমুদ্র যাত্রায় সফল হতে পারবে?
কল্পনাতে সুখী আমি, কল্পনাতেই রাজা; কল্পনা ভেঙ্গে গেলে আমি দুঃখ রাজ্যের প্রজা । (~তুর্জয় শাকিল) কাল্পনিক গল্পের এই লেখক চাঁদপুর জেলার মতলব থানায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোঃ মেজবাহউদ্দীন একজন সরকারি চাকুরীজীবি এবং মাতা সুফিয়া বেগম একজন সাহিত্য অনুরাগী ও লেখিকা। ভৌতিক ও রহস্য গল্পের লেখক হিসেবে পরিচিত তুর্জয় শাকিল সামাজিক উপন্যাস ও রম্যকথনের বইও লিখেছেন। কিশোর ক্লাসিক রহস্য সিরিজ টু ডট কেম তার অভিনব সৃষ্টি।