ফুল কে না ভালোবাসে? তাই শখ করে অনেকেই ফুলের বাগান করেন। ফুলের প্রতি মানুষের ভালোবাসাকে পুঁজি করে এখন আর শুধু বাগান নয়, অন্যান্য ফসলের মতো কিছু ফুল বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান, উপহার, পূজা-পার্বণ, উৎসব, গৃহসজ্জা, অঙ্গসজ্জা ইত্যাদিতে এখন তাজা ফুল লাগে। প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ১০ শতাংশ হারে ফুলের চাহিদা বাড়ছে। এ দেশেও দিন দিন ফুলের বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। বর্তমানে এ দেশে বছরে প্রায় ১২০০ কোটি টাকার ফুল কেনাবেচা হয়। দেশে বর্তমানে ২০টি জেলায় কমবেশি ১২ হাজার হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল উৎপাদিত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ফুল চাষ হয় যশোর ও ঝিনাইদহ জেলায়। এদেশে বাণিজ্যিক ফুলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয় গোলাপ। এরপর রয়েছে গাঁদা, রজনীগন্ধা, গ্ল্যাডিওলাস ও জারবেরা ফুল। এর পাশাপাশি স্বল্প আকারে হলেও বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে চন্দ্রমল্লিকা, জিপসোফিলা, গোল্ডেন রড, ডালিয়া ইত্যাদি। বিদেশ থেকে আসা লিলিয়াম, কারনেশন, টিউলিপ নতুন ফুল হিসেবে চাষ করা হচ্ছে। লেখক এসব ফুলের বিজ্ঞানভিত্তিক চাষ পদ্ধতি, বালাই ব্যবস্থাপনা, ফুল মজুদ ও বাজারজাতকরণ নিয়ে লিখেছেন ‘বাণিজ্যিক ফুল চাষ’ বইটি। যাঁরা ফুল চাষ করে সফল হতে চান এ বইটি তাঁদের যথেষ্ট কাজে লাগবে। তাছাড়া উদ্যানতত্ত্ব ও কৃষিবিদ্যার ছাত্রছাত্রীদেরও পাঠ্য সহায়ক হিসেবে বইটি ব্যবহৃত হতে পারে।
কৃষিবিদ মৃত্যুঞ্জয় রায় প্রায় তিন দশক ধরে বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকায় লিখছেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে এম.এসসি.এজি (উদ্যানতত্ত্ব) ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশাগতভাবে তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে। সর্বশেষ অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রয়েছে কৃষিক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সুদীর্ঘ বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ফসল উৎপাদনের বিশেষ পারদর্শীতা, শিক্ষকতা ও প্রশিক্ষণের দক্ষতা। এর ওপর ভিত্তি করে তিনি লিখেছেন ‘বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল’ বইটি।। কৃষি বিষয়ে তিনি ইতােমধ্যে অনেকগুলাে বই লিখেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর লেখা ৮৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে যার মধ্যে ৬২টি বই কৃষি বিষয়ক। কৃষি বিষয়ক লেখালেখির জন্য তিনি ২০১২ সালে পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে পেয়েছেন বাংলাদেশ একাডেমী অব এগ্রিকালচার স্বর্ণপদক।