শুধু এককভাবে ছেলে কিংবা মেয়ে নয়; মানুষ, প্রাণী হিসেবে ভীষণ বিচিত্র। সুযোগ পেলে কে কতটা বৈচিত্র্যে ভরপুর সেটা দেখাতে কার্পণ্য করে না। ভবের এই রঙশালায় সবাই দক্ষ কুশীলব। অনেকে স্বপ্ন নিয়ে অনেক কথা বলে অথচ স্বপ্ন কী, সেটাই কি তারা জানে? স্বপ্ন আসলে কী? কেন স্বপ্ন দেখি? স্বপ্ন কি আমাদের পথ দেখায়? স্বপ্ন আমাদের পথ তখনই দেখায়, যখন পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে স্বপ্নও অন্যসব অনুষঙ্গের মতো স্থবির হয়ে যায়। গভীর স্বপ্ন হলো একধরনের হাহাকার। স্বপ্ন হলো একধরনের আফসোসবোধ। জেগে থাকবে, জাগিয়ে রাখবে, হতাশ করবে; কিন্তু পথ দেখানোর শক্তির যোগান দেবে না। আদতে এমন পথের নির্দেশনা স্বপ্নের জানা থাকে না। অনেকেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে, মনের মানুষটাকে ত্যাগ করে, ভালোবাসা না থাকা সত্ত্বেও এক বিছানায় শুয়ে ধর্ষিত হয়। অবশেষে কী হয়? না হয় প্রেম, না হয় স্বপ্ন পূরণ, না আসে জীবনে ছন্দ। আফসোসবোধ নিয়ে কাটিয়ে দিতে হয় মহামূল্যবান একটা জীবন। রঙশালায় ব্যস্ত সেইসব স্বপ্নবাজ মানুষ যখন সমাজে বিচরণ করে, তখন সকলকে একটু সাবধানে পা ফেলতেই হয়। তারপরও কিছু মানুষ অন্যকে কাঁটাতারমুক্ত করার জন্য জীবন উৎসর্গ করে। মরে গিয়েও তারা একটা স্বপ্নের ভেতর বেঁচে থাকে। এই বেঁচে থাকা মহৎ, ন্যায্য, অকৃত্রিম ছন্দময়। এই জীবন সম্ভাবনাময় স্নিগ্ধতায় ভরা;ভোরের নতুন আলোর মতো নিষ্কলুষ।
মফিজুল হক, জন্ম ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮২, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায়। বর্তমানে একটি রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকে কর্মরত। প্রকাশিত গ্রন্থ- বিমূর্ত শিলালিপি (কবিতা, শ্রাবণ প্রকাশনী, ২০১৭), যেখানে মেঘ কখনো বৃষ্টি হয়ে ঝরে না(গল্প, দেশ পাবলিকেশনস, ২০১৮), অসম ক্ষতের বিলাপ (গল্প, শুদ্ধ প্রকাশ, ২০১৯), নিঃসঙ্গ জংশনে মা (কবিতা, বেহুলা বাংলা প্রকাশনী, ২০১৯)। একটা সাম্যের পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন, একটা সুশৃঙ্খল ধরণী বিনির্মাণের প্রত্যয়ে নিজেকে তৈরি করেন রোজ।