জ্ঞান ফিরে এলে ইটো দেখল প্রফেসর শিউটন তার বেডের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। উঠে বসার চেষ্টা করে পারল না ইটো। তার চার হাত পা বেডের সাথে বাঁধা। কারণ জানার চেষ্টা করতে গিয়েও ব্যর্থ হলো সে। প্রফেসর শিউটন তার মুখটাও বেঁধে রেখেছেন। ইটো বুঝতে পারল সে প্রফেসর শিউটনের গোপন ষড়যন্ত্রের শিকার। প্রফেসর শিউটন এখন তার শরীরে লাল হাইপার প্রবেশ করাবেন। এই লাল হাইপার তাকে মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জিতে রূপান্তর করবে। একই অবস্থা তার সাথে আটকে পরা তার বান্ধবী ইলিরও। ইলির শরীরে এরই মধ্যে প্রফেসর শিউটন লাল হাইপার প্রবেশ করাতে শুরু করেছেন। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছে ইলি। ইটো স্পষ্ট বুঝতে পারছে ঐরকম যন্ত্রণা তাকেও ভোগ করতে হবে। কিন্তু সে ঐ নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে চায় না। চায় না মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি হতে। তাই সে প্রফেসর শিউটনকে অনুরোধ করে বলতে চেষ্টা করল যেন তার শরীরে লাল হাইপার প্রবেশ করানো না হয়। ততক্ষণে অবশ্য দেরি হয়ে গেছে। লাল হাইপার প্রবেশ করতে শুরু করেছে ইটোর শরীরে। তীব্র ব্যথায় বারবার মুষরে উঠছে ইটো। চোখ দিয়ে গলগল করে পানি বের হয়ে আসছে। তার মনে হচ্ছে তার সমস্ত শরীরে বুঝি কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারপর একসময় যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারাল সে। কী ঘটেছিল ইটো আর ইলির ভাগ্যে? আর কী হয়েছিল প্রজেক্ট হাইপারের? সত্যি কি প্রজেক্ট হাইপার সাফল্যের মুখ দেখেছিল?
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।