‘হা সুখী মানুষ, তোমরাই শুধু জানলে না/ অসুখ কত ভালো/ কতো চিরহরিৎ বৃক্ষের মতো শ্যামল/ কত পরোপকার/ কত সুন্দর’-- এমন উচ্চারণ কেবল একজন কবিই করতে পারেন, যিনি খুব অল্প বয়সে অসুখের যন্ত্রণায় বুঁদ হয়েছিলেন; রাহাত খানের ভাষায় ‘একটুখানি আয়ুষ্মতী ঘুম চেয়েছিলেন’। অকাল মৃত্যুর আগে আবুল হাসানের বিনিদ্র রাতগুলো এভাবেই দীর্ঘতর হয়েছিল; চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিল তাঁকে - রয়ে গেল থোকা থোকা দুঃখের মতো অসামান্য টলটলে সব কবিতা, সতীর্থদের বেদনার স্মৃতি এবং একখানি সুরাইয়া খানম মিথ। হয়তো এতটুকু অনেকেই জানেন। ঔৎসুক্যও কম নয় আরও গভীরে যাবার, আরও বিস্তারিত জানার। সেই ঔৎসুক্য একদিন উঁকি দিয়েছিল আরেক কবির মনে। তারপর আবুল হাসান নামের এক দুঃখদীর্ণ জীবনের আখ্যান রচিত হয় ‘ঝিনুক নীরবে সহো’ শব্দবন্ধের আঙিনায়। এই আখ্যানে আমরা জানতে পারি অসুস্থ অবস্থায় কবির পূর্ব বার্লিনের জীবনের একটা অকথিত জগতের উন্মোচনসহ জীবনের নানা পর্বের ঘটনা, যে-জীবন স্পর্শ করেছে বাঙালি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বছরগুলোর সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক বিস্তার। মোশতাক আহমদ একজন কবি হয়ে খুঁজে ফিরেছেন তাঁর প্রিয় কবির জীবনগাথা। হয়তো এই একই জীবনালেখ্যের ভেতরে সঞ্চারিত হয়েছে লেখকের জীবনেরও অনেক গোপন দীর্ঘশ্বাস।