যে কবির মননে বিশ্বজাহান এক শিরোনামহীন কবিতা। যাঁর চোখে সমন্ন মর্ত্যধাম এক চমৎকার মহাকাব্য। স্রষ্টার এই মনোরম বসুন্ধরা এক অসাধারণ কাব্যগাঁথা- তিনি কবি ও ঔপন্যাসিক মাহবুব খান। 'পৃথিবী আমার শিরোনামহীন কবিতা' কবির চতুর্দশতম প্রকাশনা। প্রাচীনকাল থেকে আধুনিককাল, সুফিবাদ থেকে পরাবাস্তববাদ পর্যন্ত প্রায় সব কবির কবিতাই স্রষ্টা আর সৃষ্টি জগত নিয়ে আন্দোলিত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কবি মাহবুব খান ব্যতিক্রম নন। বিশ্ব সাহিত্যের ইংরেজি, উর্দু, ফারসি, ফরাসি, রুশ, জার্মান, ইতালি, স্পেনিশ সাহিত্যে তাঁর পছন্দের পাঠ্য। বিশেষ করে ওমর খৈয়াম, হাফিজ, সিরাজির শরাব তিনি আকণ্ঠ পান করেছেন। এই কবির কবিতায় যেমন আছে রোমান্টিকতা তেমনি আছে দ্রোহ। বৈশ্বিক ভাবনায় তিনি তাঁর কবিতাকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখেন। তার প্রতিফলন দেখা যায় তাঁর কবিতায়। দেশকে ভালোবেসে তাঁর বহু কবিতা দ্রোহের আগুনে পোড়ে। তাঁর ও কবিতার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো মিথোলজির প্রয়োগ। গ্রিক, রোমান, হিন্দু মিথোলজি তাঁর কবিতার পরতে পরতে ইন্দ্রজাল সৃষ্টি করে। কবি মাহবুব খান-এর কবিতার যে দিকটা বেশি সমুজ্জ্বল তা হলো মুসলিম মিথ বা কোরানিক মিথ। উনার এলব প্রতিটি কবিতা নতুন মেসেজ নিয়ে নিজেকে মেলে ধরে। নাল আধুনিক বাংলা কবিতার শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দের ভাবশিষ্য কবি মাহবুব খানের কবিতায় নতুন আর এক রূপসী বাংলার কলধ্বনি শুনা যায়। যে সকল অনুসঙ্গ কবিতাকে নান্দনিক করে তোলে তার মধ্যে উপমা, তুলনা, উৎপ্রেক্ষা, অলঙ্কার, লব ছন্দ, অন্তমিল, মিথের সাবলীল ব্যবহার তাঁর কবিতায় লক্ষ্য করা যায়। বর্তমান সময়ে যারা নিজেকে কাব্য সাধনায় ব্যাপৃত রেখেছেন কবি মাহবুব খান তাদের ভেতর অন্যতম। তিনি মূলত রোমান্টিক ঘরাণার কবি। তাঁর কবিতায় রোমান্টিকতার সাথে নিসর্গ মিলেমিশে মগ্ন মুগ্ধকর মিশ্রণের উপভোগ্য রূপ নিয়েছে। কবি মাহবুব খান নব্য সাম্রাজ্যবাদ নব্য উপনিবেশবাদ সম্প্রসারনবাদ ধর্মীয় উগ্রবাদ নেপটিজম সর্বোপরি ফ্যাসিবাদকে তিনি কবিতার হারপুন দিয়ে বধ করতে চান। তাঁর কলম এইসব অনাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার। কবি বিশ্বাস করেন সুন্দরের শুভ্র ডানায় ভর দিয়ে উড়ে বেড়ান কাব্যের স্বর্গীয় বাণী। একমাত্র কবিদেরই আছে সত্য বলার দুরন্ত সাহস। ইতিমধ্যে বাংলা কবিতায় কবি মাহবুব খান তাঁর আসন পাকাপোক্ত করেছেন। প্রিয় কবির জন্য অফুরন্ত শুভকামনা ও দোয়া। কবির কলম আরো শানিত হোক, আরো লিখুন আর সমৃদ্ধ করুন বাংলার বর্ণমালাকে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪ এ তাঁর 'পৃথিবী আমার শিরোনামহীন কবিতা' পাঠক হৃদয় জয় করুক এই প্রত্যাশা। এম নন্দিনী খান প্রকাশক নোলক প্রকাশন।
কবি মাহবুব খান কবি ও ঔপন্যাসিক মাহবুব খান বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার পেড়িখালী গ্রামে ১৯৬৫ সালের ২৪ মে ঐতিহ্যবাহী খান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মরহুম নূর মােহাম্মদ খান রামপাল কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ ছিলেন। মা মরহুমা ছবুরুননেছা। ধর্মপ্রাণ গৃহিণী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে বিএসএস (সম্মান), এমএসএস ডিগ্রী লাভ করেন। সফল সংগঠক কবি মাহবুব খান ব্যক্তিগতভাবে সহকারী হিসাব নিয়ন্ত্রক (রাজস্ব) পদে ভূমি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত রয়েছেন। তিনি দেশের জনপ্রিয় সাহিত্য সংগঠন অনুশীলন সাহিত্য পরিষদ'-এর প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব। কবি ও ঔপন্যাসিক মাহবুব খানের স্ত্রী সাহিদা খাতুন, ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষিকা। ছেলে আবরার শাহরিয়ার খান আনজুম এবং কন্যা মেহের দুরদানা খান রাইসাকে নিয়ে তাদের পারিবারিক জীবন। সুন্দরবন, নদী ও সাগরের অববাহিকায় সবুজ-শ্যামল প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠার কারণেই মানব-মানবীর প্রেমের পাশাপাশি অস্তিত্ব রক্ষায় প্রেমে, দ্রোহ, ও রােমান্টিক কবি ও ঔপন্যাসিক মাহবুব খানের লেখনীতে ফুটে উঠে। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের প্রেমরস আস্বাদন। কবি ও ঔপন্যাসিক মাহবুব খানের লেখনী আরাে সুদূর প্রসারিত হােক সেই কামনায়।