মুখবন্ধ উদ্ভিদ প্রকৃতির এক অমূল্য সম্পদ। মানুষ তথা অন্যান্য জীবজন্তুর দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় উদ্ভিদের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মানুষ রোগ -যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ভেষজ উদ্ভিদ অর্থ্যাৎ বনৌষদি ব্যবহার করে আসছে। সকল প্রকার কবিরাজী ও হেকেমী ওষুধ গাছপালা থেকে প্রস্তুত হয়। বর্তমান যুগের অনেত অ্যালোপ্যাথিক রাসায়নিক দ্রব্যও উদ্ভিদজাত। বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদে নানা রকম রাসায়নিক উপাদান আছে। বিশেষ রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতির জন্য এসব উদ্ভিদের রোগ উপশমকারী ধর্ম দেখা যায়। যেসব রাসায়নিক পদার্থ রোগ উপশম করতে পারে , তাদের বলে সক্রিয় উপাদান। এগুলো হলো উপক্ষার, গ্লাইকোসাইড ,ট্যানিন, রজন, জৈব অ্যাসিড প্রভৃতি।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারত বৈচিত্র্যময় অঞ্চল এবং এখানকার জলবায়ু ভেষজ উদ্ভিদের জন্য উপযোগী। কিন্তু কালপরিক্রমায় পশ্চিমা বহুমাত্রিকা চিকিৎসা প্রযুক্তি ও মুনাফা বাণিজ্য গোষ্ঠীর উদ্ভাবনের ফলে আজ প্রকৃতি নির্ভর এসব চিকিৎসা পদ্ধতি বিলুপ্তির পথে। তবে, বিশেষত বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ভেষজ চিকিৎসা পদ্ধত্রি গুরুত্ব অপরিসীম।
এই পুস্তকে ৪৪৪ টি ভেষজ উদ্ভিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, রাসায়নিক উপদান, উপযোগিতা ও ব্যবহার তুলে ধরা হয়েছে। তাই ছাত্রছাত্রীর সাথে সাথে সাধারণ পাঠকেরও ভেষজ উদ্ভিদ সম্পর্কে কৌতূহল বিনৃত্ত করবে এই পুস্তক। পুস্তকটির রচনার সময় আমাকে নানা ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞানী বিভাগর সহযোগী অধ্যাপক ড. গৌরপদ ঘোষ। সে জন্য আমি তাঁকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার স্ত্রী ড. দেবশ্রী পাল বরাবরের মতো উৎসাহিত ও সহযোগিতা করছেন। তাঁকে ধন্যবাদ। চিত্রের ব্যাপারে আমার প্রাক্তন ছাত্র শান্ত কুমার রায়ের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি।
সুন্দরভাবে পুস্তকটি প্রকাশ করার জন্য আলেয়া বুক ডিপোকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রফেসর ড. নিশীথ কুমার পাল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
সূচিপত্র * প্রথম অধ্যায় : সূচনা এবং ভেষজ উদ্ভিদের সংরক্ষণ * দ্বিতীয় অধ্যায় : ঐতিহাসিক পটভূমিকা * তৃতীয় অধ্যায় : ভেষজ উদ্ভিদের রাসায়নিক গঠন এবং সক্রিয় রাসায়নিক উপাদানের প্রকারভেদ * চতুর্থ অধ্যায় : ভেষজ উদ্ভিদের পরিচিতি, রাসায়ানিক উপাদান ও ব্যবহার