দ্রুত বদলে চলেছে বাংলাদেশ। আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন, আকাশ সংস্কৃতি ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা বাড়িয়ে তুলছে কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা। নৈতিক স্খলন ঘটছে ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশের কাণ্ডারীদের। শিশু-কিশোরদের শারীরিক, মানসিক, ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের পরিবেশ নিশ্চিত করলে কি কমবে কিশোর অপরাধ? রুখে দেওয়া যাবে কিশোরদের গ্যাং কালচার? যা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যা। এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। চৌকস এ কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ পুলিশের অধীনস্থ র্যাব ফোর্সেস নামের এলিট বাহিনীতে। পরিবেশ ও সঙ্গদোষে একজন কিশোর কীভাবে অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়ে তা তিনি খুব কাছে থেকে দেখেছেন এবং নিজের পেশাগত অভিজ্ঞতা ও তন্নিষ্ঠ পাঠের ফসল এই গ্রন্থটি। তিনি র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ ও গবেষণালব্ধ বাস্তব অজ্ঞিতারই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তার এই লেখায়। কমান্ডার মঈনের কলমে পাঠক দেখতে পারবেন- কিশোর গ্যাং, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কী সংকট তৈরি করেছে। তবে শুধু সমস্যার বয়ানেই সীমাবদ্ধ থাকেননি লেখক। এই অহেতুকী যন্ত্রণা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের করণীয় কী, তাও আলোচিত হয়েছে ‘কিশোর গ্যাং : কীভাবে এলো, কীভাবে রুখবো’ গ্রন্থে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন, (সি), বিপিএম (বার), পিএসসি, বিএন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এক্সিকিউটিভ শাখায় কমিশন লাভ করেন ২০০১ সালে। ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের স্নাতক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস’র এমএসসি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়’র এমবিএ। ব্যক্তিগত জীবনে কমান্ডার মঈন, স্ত্রী তাসমিয়া তিথী, পুত্র খন্দকার ওমর আল আনাস এবং কন্যা মারইয়াম বিনতে মঈনকে নিয়ে আশীর্বাদ প্রাপ্ত। দীর্ঘ এবং বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ছোট ও মাঝারি জাহাজের অধিনায়কত্ব, নৌ গোয়েন্দা পরিদপ্তরের স্টাফ অফিসারের দায়িত্ব সুনামের সঙ্গে পালন করেছেন। সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন দারফুর, সুদানে জাতিসংঘ মিশন। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিদের গ্রেনেডসহ গ্রেফতার করে ২০০৯ সালে এবং র্যাবে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য ২০২১ সালে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক ‘বিপিএম’-এ ভূষিত হন। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কমান্ডার মঈন র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক হিসেবে বিপুল সংখ্যক জঙ্গি, চরমপন্থি, মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিসহ বিভিন্ন কুখ্যাত অপরাধীকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রশংসনীয় অবদান রেখেছেন। সম্প্রতি র্যাব ফোর্সেস এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে নির্মিত দস্যুমুক্ত সুন্দরবন বাস্তবায়নে ব্যতিক্রমধর্মী চলচ্চিত্র “অপারেশন সুন্দরবন” সিনেমাটির প্রযোজকের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশব্যাপী ব্যাপক সাড়া ফেলেন। ২০২১ সালের ২৫শে মার্চ থেকে তিনি র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক হিসেবে কর্মরত।