সারাদিন খাদ্যাম্বাষের পর দু'টো ডানায় একরাশ ক্লান্তি নিয়ে অপরাহে যে পাখিগুলো নীড়ে ফিরে আসে, অথবা সুশৃঙ্খল সারিবদ্ধভাবে খাবার খুঁজে বেড়ানো পিঁপড়া-তাদেরও কী 'তুমি পুরুষ নাকি মহিলা?' প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়? এদের ভাষা কেউ বুঝে না বলে হয়তো কারো তা জানা নেই। কিন্তু দু'পাবিশিষ্ট মানুষদের হরহামেশা এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তনিমকে হতে হয়। হোক বাবা, মা, ভাই, বোনের মতো পরম পরিচিত কেউ অথবা অদ্ভুত অপরিচিত, এই দ্বিধান্বিত প্রশ্নবানের তীর সবার হাতেই থাকে। এই সমাজ যেন সবাইকে বন্দি করতে ব্যস্ত। কাউকে কর্মে বন্দি করছে, তো কাউকে ধর্মে বন্দি করছে। কাউকে বন্দি করা হয় দালান ঘরে, কাউকে বা বিরান চরে। আবার কাউকে বন্দি করা হয় লিঙ্গের জালে। তনিমকেও বন্দি করা হয়েছে, হচ্ছে। প্রতিনিয়ত...। তনিম নিজেকে কিভাবে প্রকাশ করবে এর ইখতিয়ার তনিমের হাতে নেই: আছে সমাজের হাতে, সমাজের মানুষের হাতে। লড়াইয়ে পূর্ণ এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার লড়াই প্রায় সবাইকেই করতে হয়। কিন্তু তনিমদের লড়াইটা একটু বেশি। কেননা তা অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। কী হয় তনিমদের জীবন কাহিনি? বেঁচে থাকার লড়াইয়ে কিভাবে নিজেকে টিকিয়ে রাখে তারা? বইয়ের শেষে হয়তো উত্তর পাওয়া যাবে।
তানভির অনয় একজন লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী। ১১ই ফেব্রুয়ারি, ঢাকায় জন্ম তাঁর। ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেইটভিল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি ভাষা ও অনুবাদ নিয়ে অধ্যয়ন করেছেন। লৈঙ্গিক বৈষম্যসহ আর্থ-সামাজিক সমস্যা ও সমাধান নিয়ে তিনি লেখালেখি এবং কাজ করেন। ইতোমধ্যে তিনি একাধিক প্রকাশনার সম্পাদনা করেছেন। কথাসাহিত্যের জগতে তাঁর আগ্রহ প্রবল, লিখেছেন বেশ কিছু ছোট গল্প। ‘পুণ্যাহ’ তাঁর প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস।