মির্জা গালিব; উর্দু ভাষার অন্যতম প্রভাবশালী কবি। ২৭ ডিসেম্বর ১৭৯৭ সালে তার জন্ম। তার পূর্বপুরুষরা আইবাক জাতীয় তুর্কি ছিলেন। তাদের আদি নিবাস ছিল সমরকন্দ। মির্জা গালিব ও তার ছোট ভাই সাবালক হওয়া পর্যন্ত আগ্রায় ছিলেন। আগ্রার বিখ্যাত বিদ্বান শেখ মুয়াজ্জামের কাছে শিক্ষালাভ করেন। মোল্লা আবদুস সামাদ নামে এক পারসিক দুই বছর আগ্রায়, পরে দিল্লিতে মির্জা গালিবের সঙ্গে ছিলেন। গালিব তার কাছ থেকে ফারসি ভাষার তালিম নেন। এ ছাড়া তিনি মীর আজম আলী পরিচালিত একটি মাদরাসায়ও পড়েন। তিনি যুক্তিবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র ও কিন্তু তার ঝোঁক ছিল শিল্প-সাহিত্যের প্রতি। ১৮১০ সালে ১৩ বছর বয়সে গালিব বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। অধিবিদ্যা ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে পড়াশোনা করেন। বিয়ের পর তিনি আগ্রা থেকে দিল্লি চলে আসেন। তিনি দিল্লিতে প্রায় ৫০ বছর ছিলেন। এ পুরো সময়ে তিনি কোনো বাড়ি নিজের জন্য কেনেননি। চিরদিন ভাড়াবাড়িতে কাটিয়েছেন। জীবনভর সৃষ্টিধর্মী কাজে কাটালেও কখনও বই কেনেননি। বই ভাড়া করে পড়ে ফেরত দিতেন। আজীবন দারিদ্র্যের মধ্যে কেটেছে। ঋণের ওপর ঋণ করেছেন। কিন্তু কখনও কোনো পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেননি। তার সময়েই মোগল সাম্রাজ্য ঔজ্জ্বল্য হারায়। দিল্লি ব্রিটিশরা দখল করে নেয়। তাই তাকে বলা হয় শেষ মোগল সভাকবি। তার গজল ও কবিতা শুধু ভারত, পাকিস্তান বা বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতেই জনপ্রিয়। ১৮৬৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এ মহাকবি ইন্তেকাল করেন।