আমি জন্মেছি বারবার আমি রুদ্ধদুয়ার খুলে অগ্নিগর্ভ পৃথিবী আমাকে প্রতিবার গেছে ভুলে। কাজী হেলালের কবিতায় জীবনের আদি অন্ত খুঁজে পাওয়া যায়। তিনি শুধু বর্তমানের মধ্যে আবর্তিত নন। তিনি কখনও অতীতচারী, কবিতায় ইতিহাসবিদÑÑকবি ইতিহাস থেকে তুলে আনেন কবিতার সৌরভ। আজ আমরা যাঁদের ভুলে যেতে বসেছি, তিনি তাঁদের সমুজ্জ্বল অবদান তুলে আনেন কবিতায়। তাঁর কবিতাপাঠে আনন্দ যেমন হয়, তেমনি হারানো ঐতিহ্যকে ফিরে পাবার প্রেরণা পাওয়া যায়। বুকের গহীনে ডেলফিনিয়াম কাজী হেলালের তৃতীয় কাব্য। তিনি কানাডাপ্রবাসী। কিন্তু তাঁর মন সততই শৈশব কৈশোর যৌবনলগ্ন হয়ে থাকে। তাঁর কবিতায় ঘুরে ফিরে আসে শৈশবের নদী, মৎস্যজীবী, গ্রামীণ সমাজ এবং অবশ্যই তাঁর কবিতার উপাদান হয়ে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের গাঁথা। কাজী হেলালের এই কাব্যে মানুষের মানব-অভিযাত্রার কথা যেমন এসেছে তেমনি তিনি বিশে^র গভীরতর সংকটকেও উপেক্ষা করেননি। বিশ^-অমানবিকতার ক্ষত ও আর্তস্বর তাঁর কবিতায় নতুন ভাষা পেয়েছে। কাজী হেলাল চিরকালীন প্রেমের কবি। ভালোবাসার মানুষকে তিনি বর্ণ গন্ধ দিয়ে এঁকেছেন। মৃদু রোদে দীর্ঘকেশী মুক্ত রাখে নাভিমূল তার ; খোঁপায় তখন বকুলমালা একটি দুটি পাপড়ি ঝরে। কাজী হেলালের দীর্ঘতম কবিতা মানুষের পাঠশালা এই কাব্যকে সম্পন্ন করেছে। বাংলা কবিতার ভা-ারে যুক্ত হল সতেরো পৃষ্ঠার একটি সুদীর্ঘ কবিতা। ইতিহাসলগ্ন এত দীর্ঘ কবিতা হয়তো বাংলাভাষায় দ্বিতীয়টি নেই। কবিকে অভিবাদন। -প্রকাশক