এত অল্প দিনের জীবনে, এত বড় ধাক্কা! অবিশ্বাস্য, এভাবে কেউ কারো সঙ্গে প্রতারণা করে! এত নিষ্ঠুরভাবে? ক্ষোভে, অভিমানে কাকলীর মনের ভেতর বাড়ছে বিষের যন্ত্রণা। তবু দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করার খুব চেষ্টা, ছেলেটাকে নিয়ে একটা উৎকণ্ঠা সারাক্ষণ তাকে তাড়া করছে, এমন করে বেঁচে থাকার মধ্যে তো স্বস্তি নেই একটুও। মানুষ কী করে এত বড় জোচ্চুরি করে; এতদিনের চেনা মানুষটিও তার কেমন অচেনা-অজানা! থানাহাজতে কেমন গুটিয়ে বসেছে অন্তঃসত্তা আলেয়া। একটা হাত তার পেটের ওপর। আলেয়া কী ভাবছে, সে বড় জঘন্য অপরাধ করেছে! কী নির্মম নিষ্ঠুরতা! নিজের গর্ভের নিষ্পাপ সন্তানটা কখনো তার বাবাকে দেখবে না! আহা! আলেয়ার দুচোখ জলে ভরে উঠে; বুকের ভেতরটা পুড়তে থাকে কেমন অদৃশ্য আগুনে! আবছার উদ্দিনের চোখে পানি এসে যায় একটু। তিনি চোখের পানি লুকাতে চেষ্টা করছেন। বুলবুলির কাছ থেকে দ্রুত উঠে যান। একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাসও ছাড়লেন খুবই গোপনে। দিন শেষে সন্ধ্যা নামে। ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে জ্ঞান হারায় বুলবুলি। সন্ধ্যারাতে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে সদরের হাসপাতালের পথে হাঁটা ধরেন নিরুপায় সালেহা বেগম। স্ত্রীর পিছনে পিছনে মুখ ভার করে এগিয়ে যান আবছার উদ্দিনও। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না! পথেই মারা যায় বুলবুলি।
ইংরেজি বিভাগে স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। লেখালেখির হাতেখড়ি কলেজ জীবনের শুতেই। ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য ও সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকে পড়া। সাহিত্যের পাশাপাশি সাংবাদিকতা এবং আইন বিষয়েও পড়েছেন। গল্প-উপন্যাস লেখার প্রতি রয়েছে তার আগ্রহপ্রবণতা। মাঝে-মধ্যে দু’চার লাইন গানের কথা। লেখালেখিটা তার অবসর সময়ের কাজও বটে। সমকালীন ইস্যু নিয়ে প্রায় সময় পত্র-পত্রিকায় লিখে থাকেন। 'অনাকাঙ্ক্ষিনী’ উপন্যাসটি প্রকাশের পর পাঠকদের কাছ থেকে লেখালেখির প্রতি আরও উৎসাহ পেয়েছেন। লেখকের জন্মস্থান চাঁদপুর সদর জেলায়। বর্তমানে তিনি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সহ-সম্পাদক পথে কর্মরত।