"মরণজয়ী" বইয়ের কিছু কথা: ‘মরণজয়ী’ নসীম হিজাযীর জনপ্রিয় ঐতিহাসিক উপন্যাস সমূহের অন্যতম। ‘মরণ জয়ী’ পঁয়ত্রিশ থেকে পচাত্তর হিজরী পর্যন্ত সময়কালের পটভূমিতে রচিত উপন্যাস। মুসলমানদের উত্থান-পতনের বৈচিত্র্যময় ইতিহাসে এই চল্লিশ বৎসর যে কোন বিচারে ছিল এক ক্রান্তিকাল। এই মুদ্দতকালেই আলমে ইসলামের সীমা একদিকে স্পেন ছাড়িয়ে ফ্রান্সের গিরিনিজ পর্বতমালা, অপরদিকে ভারতবর্ষ পর্যন্ত, একদিকে অফ্রিকার সাহারা মরুভূমি, অপরদিকে মধ্য এশিয়ার তুর্কিস্থান তাতারাস্থান পর্যন্ত ষড়যন্ত্রের সুবাদে প্রথমবারে মত রাহুগ্রস্ত হয়। এ ছিল সেই কাল, যখন মুসলিম বীর মুহাম্মদ বিন কাসিম সিন্ধু জয়ের গৌরব অর্জন করেন, মহাবীর মুসা স্পেন বিজয় করেন, আর মধ্য এশিয়াকে আলমে ইসলামের অন্তর্ভূক্ত করেন কুতায়বা বিন মুসলিম। ভাগ্যের চরম পরিহাস, মুসলিম উম্মাহর চিহ্নিত গােপন দুশমনের পরিকল্পিত চক্রান্তের ফলে এই মুসলিম বীরদের প্রত্যেকেই জিল্লতির পরিণাম বরণে বাধ্য হন। উপন্যাসের সার্থকতার প্রয়ােজনে নসীম হিজাযী এ বইয়ে সৃষ্টি করেছেন কিছু কাল্পনিক চরিত্র, কাহিনীর জ্বাল বুনতেও অনিবার্যভাবে কিছুটা কল্পনার আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু এতে ইতিহাসের মূল সত্য কোথাও বিকৃত হয়নি। মরণ জয়ী’ এমন এক উপন্যাস, যা একবার পড়া শুরু করে শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাঠককে থামতে দেয় না। এখানেই উপন্যাসখানির সার্থকতা।
Nosim Hijajee শরীফ হুসাইন (ছদ্মনাম নসিম হিজাজী হিসাবে বেশি পরিচিতি, জন্ম:১৯১৪ - মৃত্যু: ২ মার্চ ১৯৯৬) হলেন একজন পাকিস্তানি উপন্যাসিক ও লেখক, যিনি লেখালেখির সময় নসিম হিজাজি ছদ্মনাম ব্যবহার করেন। বাল্য ও কৈশোর কাল গ্রামে কাটলেও তার সোনালী যৌবনটুকু দখল করে আছে ঐতিহাসিক লাহোর শহর। এখানেই তিনি লেখাপড়া করেন এবং লাহোর ইসলামীয়া কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে ডিগ্রী পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি একজন উর্দু ভাষার লেখক। হিজাজী পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার ধারওয়াল শহরের পাশের একটি গ্রাম সুজানপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই ১৯৪৭ সালে তার পরিবার লাহোরে বসবাস শুরু করে। তিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় পাকিস্তানে কাটিয়েছেন এবং ১৯৯৬ সালের ২ মার্চ তারিখে ইন্তেকাল করেন।