শনিবার সকাল। ব্যাচেলর বাসার বন্ধ রুম থেকে উদ্ধার হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী তামিম আদনানের লাশ। তামিমের আরেকটা পরিচয় হলো, সে একজন সাংবাদিক। দ্য ডেইলি সিটি নামক একটি দৈনিক পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি সে। কয়েক মাস পূর্বে ইউনিভার্সিটি অথোরিটির 'নিয়োগ বাণিজ্য' নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল তামিম। স্বাভাবিকভাবেই অনেক রাঘববোয়ালের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল ছেলেটি। তাছাড়া ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের সাথে ছিল তার সাপে-নেউলের সম্পর্ক। কলমের খোঁচায় একাধিকবার তাদের বাড়া ভাতা ছাই দিয়েছিল সে... তামিমের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব পড়ে ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টের উপর। ডিডির সিনিয়র ইনভেস্টিগেটর সাদমান সানি তার সহকারী জামিল হোসেনকে নিয়ে তদন্তে নামেন। জানতে পারেন, পাশের বিল্ডিংয়ের এক হিন্দু মেয়ের সাথে একটা বেনামি সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তামিমের। তাহলে কি এটা অনার কিলিং? ধর্মের ঐতিহ্য রক্ষায় কেউ কি পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তামিমকে? সেটা কি আদৌ সম্ভব! এদিকে মৃত্যুর ঠিক আগের দিন তামিম আদনান তার ফেসবুক আইডি থেকে আত্মহত্যা সংক্রান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করে। তাহলে কি তামিম আত্মহত্যা করেছে? কিন্তু কেন? তামিমের লাশ যেদিন উদ্ধার হয়, সেদিন বিকালে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা একজন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা সন্তানসহ হাজির হন টিভি মিডিয়ায়। অভিযোগের আঙুল তোলেন সহকর্মী সুপারস্টারের দিকে। গোটা দেশ ফেটে পড়ে এই ইস্যুতে। ভাইরাল ইস্যুর তলে চাপা পড়ে যায় তামিমের মৃত্যুর বিষয়টি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে যতটা আলোচনা হওয়ার কথা ছিল, তার সিকিভাগও হয় না। সাদমান সানি কি পারবেন চাপা পড়া রহস্যকে টেনে তুলতে? তদন্তে নেমে এক অদ্ভুত গোলকধাঁধায় পড়ে যান ক্ষুরধার মস্তিষ্কের ডিটেকটিভ। রহস্যের গলিঘুঁজিতে ঘুরপাক খেতে থাকেন চরকির মতোন। আত্মহত্যা নাকি হত্যা— এই একটা প্রশ্ন রীতিমতো কানামাছি খেলতে থাকে তার সাথে। প্রিয় পাঠক, এক রহস্যময়, রোমাঞ্চকর, ব্যতিক্রম এবং বাস্তবধর্মী গল্পে আপনি স্বাগত। যে গল্পের শেষটা আপনাকে স্তব্ধ করে দিবে।
১৯৯৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, রমাজান মাস, ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে তীব্র ক্ষুধা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলাম— সৃষ্টিশীল কর্মের ক্ষুধা, সম্ভাব্য সকল মাধ্যমে গল্প বলার ক্ষুধা। শৈশব কেটেছে মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার শিরুয়াইল গ্রামে। গ্রামের পাশ দিয়ে কুলকুল করে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁর শাখা নদী। নদী দেখে বেড়ে ওঠা এই আমি সম্ভবত এ কারণেই একটু দুরন্ত প্রকৃতির— ছুটে চলাই যার অদ্বিতীয় পেশা। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, স্রোতের মতো প্রবহমান হওয়া সত্ত্বেও আকাশ, নদী, ঝর্ণা কিংবা পাথুরে পাহাড়ের চেয়ে আমাকে বেশি টানে নিয়ন আলোর চারদেয়াল। শব্দমেট্রোতে চড়ে বিশ্ব ভ্রমণ করি, আড্ডা দিই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে। প্রিয় শখ ক্যালিগ্রাফি করা। প্রিয় দৃশ্য আব্বু-আম্মুর মুখের হাসি। পড়াশোনা করছি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১২ তে কুরআনুল কারীমের 'হিফজ' এবং ২০২১ এ হাটহাজারী মাদরাসা থেকে 'দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স)' সম্পন্ন করেছি। অসংখ্য সুন্দর স্বপ্নের ঘেরাটোপে বসবাস করা এই সহজ ছেলেটি একজীবন লিখে যেতে চায়।