সুইজারল্যান্ডে ছায়া সুনিবিড় মায়েনফেল্ড গ্রাম। বিস্তীর্ণ জমি, সবুজ গাছপালা আর ঝোপঝাড়ের ভেতর দিয়ে একটা পায়ে চলা পথ উঁচু পাহাড়টির একদম নিচের ঢালুতে উঠে এসেছে। এখানেই জন্ম হাইদির। ছোটবেলাতে মা-বাবাকে হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়ে সে। তাকে মানুষ করার দায়িত্ব নেয় খালা ডেটি। কিন্তু খালার অন্যত্র কাজ জুটে যাওয়াতে হাইদিকে নিয়ে বিপাকে পড়েন। পরে তাকে বৃদ্ধ দাদা আল্প-এর কাছে দিয়ে আসেন। দাদা আল্প বিষয়টিকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। তারপরেও হাইদিকে মেনে নেন। ছোট্ট হাইদি আপন কুশলতায় দাদুর মন জয় করে নেন। একপর্যায়ে হাইদিকে যেতে হয় অন্য শহরে। সেখানে ক্লারা নামের একটি পঙ্গু মেয়ের সঙ্গী হিসেবে তাকে পাঠানো হয়। সেখানে তার মন বসে না। সে তার ফেলে আসা গ্রামকে প্রচণ্ডভাবে অনুভব করতে থাকে। এ নিয়ে একসময় হাইদি মানসিকভবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পুরো গল্পে পাঁচ বছরের কিশোরী হাইদি সবার মুখোমুখি হয়েছে উজ্জ্বল সূর্যরশ্মির মতো। হাইদির ছোঁয়ায় দাদা ও ক্লারার জীবনে এসেছে পরিবর্তন। প্রকৃতির সৌন্দর্য ও শক্তির উপলব্ধি ও সুইস আল্পস পর্বতের মহিমান্বিত পরিবেশ হাইদি বইটিকে প্রাণবন্ত করেছে। শিশু মনের মনস্তাত্মিক অন্তর্দৃষ্টি, হাস্যরস, শিশুসুলভ আনন্দ এবং দুঃখের ভেতর প্রবেশ করার ক্ষমতা বইটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সুইস লেখিকা জোহানা স্পাইরির এক অমর সৃষ্টি হাইদি। মূল জার্মান ভাষা থেকে বহু ভাষায় এই বইটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশ এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কিছুতে সম্পৃক্ত করলে একটি শিশু কতটা অসহায় আর মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে তা এই বইটির কাহিনিতে বলা হয়েছে।