জলের উপরিতলে জ্যোৎস্নার স্বাক্ষর কিংবা রৌদ্রের রূপময়তা খলিল আহমদের কবিতায় একান্তই উজ্জ্বল। প্রকৃতি ও জীবনের ক্ষণকালীন চঞ্চলতাকে তিনি তাঁর কবিতার বাণীরূপে শর্তহীন ধরে রাখেন। স্বদেশ ও জগৎ-প্রকৃতির উদার ক্যানভাসে তাঁর এই ভাষিক অঙ্কন একান্তই স্ফূর্ত ও আন্তরিক।। কবি হিসেবে একে তাঁর স্বাভাবিক প্রাণশক্তির অক্ষত নজির হিসেবে দেখা যায়। প্রথা কিংবা প্রতিষ্ঠার ছকে বাঁধা অভ্যাসের উৎপীড়ন তাঁকে আড়ষ্ট করে না। স্বকীয় প্রকাশে উচ্ছল বর্তমান বইয়ের কবিতাগুলোতে তাঁর সাচিবিক অস্তিত্বের কোনো প্রকার ক্লান্তি বা কঠোরতা চোখেই পড়ে না। সৃষ্টির বিশেষ মুহূর্তে সৃজকের অবস্থা শিশুত্ব বা মাতৃত্বের সরলতার মধ্যে অবস্থান করে। এই তাঁর শ্রেষ্ঠতম ধ্যানাবস্থা, শ্রেয়তম নিমজ্জন। গভীর চোখে দেখলে তাঁর লেখায় এই অবচেতন সারল্যের অভিঘাত স্পষ্টতর। অভ্যস্ত চর্চার একঘেয়েমি তার রুচিগত শুদ্ধতায় ছায়াপাত করে না। প্রাকৃতিক প্রাণময়তা ও প্রেমার্ত হৃদয়ার্তির দ্যুতিতে তাঁর কিছু কবিতা এতই উজ্জ্বল যে মুহূর্তে সেগুলো পাঠকচিত্তের অধিকার বুঝে পেতে সক্ষম।। আলোকিত কবিত্বের সৌরভ চারপাশের মানুষদের মুগ্ধ করবে, এমনটাই আশা করা যায়। শিল্পজগতে তাঁর পরিক্রমা অস্তিত্বের সৌন্দর্যকে আকর্ষণীয় করে তুলবে, এ-ই স্বাভাবিক। গ্রন্থবদ্ধ কবিতাগুলো সমঝদার মনে অনাবিল আনন্দের রসদ জোগাবে বলেই ধারণা করা যায়।