ফারুক মাহমুদ দীর্ঘদিন কবিতার পাশাপাশি সাহিত্যের অন্যান্য শাখায়ও কলম ধরেছেন। গল্পের সংখ্যা অনেক হলেও 'কবি লিখলেন মেঘ' তার প্রথম গল্পগ্রন্থ। এই গ্রন্থে রয়েছে নয়টি গল্প। বিষয়-বিবেচনায় গল্পগুলোকে ছয় ভাগে ভাগ করা যায়। একটি গল্পে মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি রয়েছে মূর্ত, বিমূর্ত এবং প্রতীকী ব্যঞ্জনায়। সংস্কৃত সাহিত্যের দুই দিকপাল কালিদাস, বানভট্ট আছেন দুটি গল্পে। বৌদ্ধ সাহিত্যের অন্তর্গত 'থেরী গাথা'র 'আম্রপালী' ও 'ভদ্দা কুণ্ডলকেশা' চরিত্র নিয়ে দুটি গল্প রয়েছে। দুটি গল্পে প্রেমানুভূতির বিচিত্র প্রকাশের আলো এবং ছায়া বিবৃত হয়েছে। একটি গল্পে পাওয়া যায় সমকালীন সমাজচিত্র, আছে একটি পৌরাণিক গল্প। শুধু বিষয় এবং বয়ানের ওপর গল্পের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে না। ভাষাপ্রকরণও গল্পসাফল্যের গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক। এমন বিবেচনায় এই গ্রন্থের কয়েকটি গল্পের আঙ্গিক স্থাপনে নতুনত্ব রয়েছে। ফারুক মাহমুদের গদ্যভাষার স্বচ্ছতা, গতিময়তা পাঠক মহলে প্রশংসিত। এই গন্থের গল্পসমষ্টিতে লেখক পদ্যগন্ধী গদ্য ব্যবহার করেছেন। এটি আমাদের গদ্যভাষায় একটি নতুন সংযোজন। গল্পের বিষয় ও কাল বিবেচনায় তিনি আবশ্যিক ভাষা ব্যবহার করেছেন।
Farook Mahmud- কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে ১৯৫২ সালের ১৭ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর। বিচিত্র পেশায় জড়িত থাকলেও এখন সাংবাদিকতা করছেন। দৈনিক আমার দেশ-এর সহকারী ও সাহিত্য সম্পাদক। মূলত কবিতা লেখেন। তার প্রকাশিত কাব্যÑপাথরের ফুল, অপূর্ণ তুমি আনন্দ বিষাদে, অনন্ত বেলা থেকে আছি, এত কাছে এত দূরে, সৌন্দর্য হে ভয়ানক, বাঘের বিষন্ন দিন, অন্ধকারে মুগ্ধ। ২০০৯ সালে সুকুমার রায় সাহিত্য পদকে ভূষিত হয়েছেন।