আমরা অনেকেই জানি কবিতার বিস্ময়-বালক র্যাঁবো আর কিটস-শেলি-বায়রন-মায়াকোভস্কি- সিলভিয়া প্লাথের অকালপ্রয়াণের কথা; জানি বাঙালি কবি সুকান্ত ও আবুল হাসানের কথাও। কিন্তু দেশ- মহাদেশজুড়ে কত যে অকাল-ঝরা কবি রয়েছেন তার শুমার করা সত্যিই কঠিন। চল্লিশ না-পেরোনো এমন কবিদের নিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করলেন কবি বকুল আশরাফ। বিশ্বের ছয় মহাদেশের পঞ্চাশটির বেশি দেশের প্রায় দুশোজন কবিকে তিনি তুলে আনলেন পরম মমতায়। তাঁদের জীবনী শুধু নয়, সৃষ্টির বিভিন্ন নির্যাসও তুলে ধরলেন। নিজে যেমন অনুবাদ করেছেন, তুলে এনেছেন বিখ্যাত কবি-অনুবাদকদের অনুবাদও। আর এগুলোর ভিতর দিয়ে প্রস্ফুটিত হয়েছে এক বিস্তৃত-বিচিত্র-মহান কবিতার উদ্যান। পাণ্ডুলিপিটি পাঠ করতে গিয়ে জীবন-মৃত্যুর এত বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি, সবটুকু ভাষায় ফোটানো অসম্ভব। কতভাবেই না এই কবিদল হত্যা ও মৃত্যুর শিকার হয়েছেন! যুদ্ধ-মহাযুদ্ধ, দুর্ঘটনা, দলীয়-রাজনৈতিক কোন্দল, খুন-গুম, রোগ-শোক, আত্মহনন। যেন এক মৃত্যুর মহামিছিল। অথচ এক- একজনের প্রতিভা ও শৈলী কী বিস্ময়কর! প্রাচীন থেকে বর্তমানের অজস্র কবি ও তাঁদের কবিতাকে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন কবি বকুল আশরাফ, বলতেই হবে এতে তিনি অমানুষিক পরিশ্রম করেছেন। অপরিসীম ধৈর্য, অন্তর্গত লিপ্ততা আর কবি-কবিতার প্রতি গভীর প্রেম ছাড়া এ অসম্ভব। বিশ্বকবিতার অফুরান ভান্ডার এত সযত্নে মায়ের ভাষায় গ্রন্থিত করার জন্য আমরা তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। সৈকত হাবিব কবি