সম্পাদকীয়: পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় আমার ৪র্থ যৌথ কাব্য গ্রন্থ "শূন্যের ভিতরে ঢেউ " সম্পাদনার মতো গুরুদায়িত্ব নিয়ে অবশেষে গ্রন্থটি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছি। বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় কিছু লেখকের হৃদয় নিংড়ানো অনুচ্চারিত কণ্ঠের ভাষাকে দু'মলাটের মাঝে প্রকাশ করার প্রয়াস নিয়েছি। কবির শাণিত কলম অবিচল, কবির কলম থেমে নেই, থেমে থাকতে পারে না। কারণ তারাই সমাজের দর্পন। জীবন কারো জন্য থেমে থাকেনা, থেমে থাকে না সময়। জীবন - জগত আর পারিপার্শ্বিকতাকে ধারণ করেই তারা সাজান কবিতার দেহ- পল্লব হৃদয়ছোঁয়া কারুকাজ দিয়ে। সাহিত্য পূরণ করে মানুষের হৃদয়ের ক্ষুধা। শব্দের পরে শব্দের ঢেউ তৈরি করে লেখক আর পাঠকের মাঝে দ্বৈত যুগলবন্দীর সেতুবন্ধ। পাঠকের মনের খোরাক জোগায়। মহাসাগরের উত্তাল ঢেউ যেমন বলুকাবেলায় এসে তার উন্মত্তা জানান দেয় তেমনি করে প্রত্যেক লেখকের মস্তিষ্কের নিউরণ ভেঙে তার বিশাল সমৃদ্ধ শব্দভান্ডারের ঢেউ পাঠক হৃদয়ের পাড়ে এসে তার লেখার গভীরতাকে জানান দিয়ে যায়। যে বীজটা বপন হয়ে যায় তা স্বচ্ছ মানসিকতার হলে তার ফলশ্রুতি একদিন গগনস্পর্শী হয়। গ্রন্থটিতে বিভিন্ন দেশের মোট ৮জন জনপ্রিয় নবীন ও প্রবীণ কবিদের কবিতা স্থান পেয়েছে। মনের মাধুরী মিশানো নিপুণ ছোঁয়ায় প্রতিটি কবিতা প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। প্রেম, বিরহ, দেশ ও সমাজের অতীত বর্তমান ভবিষ্যত সাবলীল শব্দ ভান্ডারে অভিনবত্ব পেয়েছে। সম্পাদনা করতে গিয়ে কখনো কখনো আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছি।কবিদের লেখগুলো পড়তে পড়তে হারিয়ে গিয়েছি কাব্যের অতল সাগরে। একটি গ্রন্থের সম্পাদনা যথেষ্ট কঠিন। কঠিনকে ভালোবেসেই চেষ্টা করেছি নির্ভুল থাকতে। কোথাও কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখার আহ্বান রইলো। জীবন সাহিত্য আর সাহিত্য জীবন। পাঠককুলের কাছে একমাত্র কামনা -- একটি নিরস পাত্রে সরস জল ঢেলে তৃপ্তি সহ পান করতে পারলে আমার প্রয়াস স্বার্থক হবে। গ্রন্থটিতে অংশগ্রহণকারী সকল কবি আগামী প্রজন্মের কাছে সাহিত্য জগতে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে পারেন সেই প্রত্যয় ব্যক্ত করে সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
কবি মাহ্ফুজা আহমেদ (লিটু)। পিতা- মৃত মহিউদ্দিন আহমেদ (বিশিষ্ট ব্যবসায়ী)। মাতা- জেব-উন নিসা আহমেদ (নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যলয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা), স্বামী- মোঃ মোজাহার আলী শোভা (জেলা মুন্সীগঞ্জ, গ্রাম মদনখালী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক)। কবির ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বড় হয়ে ওঠা। তিনি ১৩ই এপ্রিল ১৯৬১ইং সালে খুলনায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা জেলার দোহার থানা, গ্রাম লটাখোলা বড়বাড়ি (আদি নিবাস) ও নবাবগঞ্জ থানা, গ্রাম কাশিমপুর কবির পৈত্রিক নিবাস। ১৯৭৭ইং সালে নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি প্রথম বিভাগে পাশ করেন। ১৯৭৮-৭৯ইং শিক্ষাবর্ষ দোহার নবাবগঞ্জ কলেজে পড়াশোনা করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং স্বামীর ও নিজের একাগ্র আগ্রহে ১৯৯৭ইং সালে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন। তিনি এক পুত্র ও তিন সন্তানের সার্থক জননী। সন্তানেরা নিজ নিজ পরিমন্ডলে প্রতিষ্ঠিত। কবি ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ “আমি সুদূরের পিয়াসী”, “শ্রাবণ অভিসার” ও “যে প্রেম নীরবে কাঁদে”। তন্মধ্যে “শ্রাবণের অভিসার” ভিন্নমাত্রা এবং “যে প্রেম নীরবে কাঁদে” কবি ও কবিতার ভুবন সংগঠন থেকে সেরা কাব্যগ্রন্থ হিসাবে পুরস্কৃত হয়। “যে প্রেম নীরবে কাঁদে” কাব্যগ্রন্থটি কলকাতা ১৭টি রাজ্য থেকে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে। তিনি সম্পাদনা করেন ১) জ্যোৎস্না বৃষ্টি, ২) হৃদয় পারাপারের সাঁকো ৩) অদীপ সাঁঝে প্রদীপ শিখা ৪) নিঃসঙ্গতার কান্না। এবং ১৩টি যৌথ কাব্যগ্রন্থ: ১) জ্যোৎস্না বৃষ্টি ২) হৃদয়ের অশ্রু কথা, ৩) কবি কঙ্কণ, ৪) সিনথিয়ায় এক ঝাঁক তারা, ৫) হিরন্ময় কাব্যের বেলা ভূমি, ৬) বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, ৭) কাব্যের ভেলা, ৮) কাব্যের নোঙর, ৯) মানচিত্রের বিনিদ্র রজনী, ১০) কবিতাগুচ্ছ, ১১) শত কবির কাব্য কথা, ১২) শিশিরে ভেজা কার্ণিশ, ১৩) করোনাক্রান্তি, ১৪) মনুষ্যত্বের প্রতিবিম্ব, ১৫) হৃদয়ের স্বপ্নকাব্য, ১৬)স্বপ্নের ডানায় কাব্য, ১৭) সীমান্ত বন্ধন, ১৮) কাব্য প্রজন্ম। লেখালেখি ও সাংস্কৃতি চর্চার কারণে তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার এবং বাংলা কবিতাঙ্গন সংগঠন থেকে “জাতীয় মননের কবি আল মাহমুদ আজীবন সন্মাননা” ও “কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ” সন্মাননা স্মারক, গাঙচিল সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ থেকে “মহিউদ্দিন স্মৃতি স্মারক আজীবন সদস্য সন্মাননা” তে ভূষিত হয়েছেন। এই পর্যন্ত তিনি এক শতাধিক অনলাইন সন্মাননায় ভূষিত হন। ইতিমধ্যেই তিনি অনলাইন সাহিত্য জগতে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন।