মাছরাঙা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ সালে। লিটলম্যাগ হিসেবে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের জন্য মাছরাঙা খ্যাতনামা অনেকেরই নজর কাড়ে। সর্বশেষ ২০০৭ সালের আগস্টে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে নানা কারণে আর প্রকাশ হয়নি। সময়ের প্রেক্ষাপটে আবারও মাছরাঙা প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়, এক্ষেত্রে লিটলম্যাগ নয় বরং শিল্পসাহিত্যের কাগজ হিসেবে নবযাত্রা তাই আমরা লিখছি প্রথম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা। আশাকরি বিগত দিনেও যেমন মাছরাঙার অনেক অর্জন ছিল আগামীতেও তা থাকবে এবং সেখানে পাঠক-শুভানুধ্যায়ী মূখ্য ভূমিকা পালন করবেন। শিল্প সাহিত্যের অনেকগুলো কাগজ থাকা সত্ত্বেও মনন, চিন্তা-চেতনা ও বিষয়ভিত্তিক মানের দিক থেকে মাছরাঙা অনন্য থাকার ইচ্ছা পোষণ করছে, সেক্ষেত্রে মাছরাঙার লেখক-পাঠক উজ্জীবনী শক্তি হিসেবে পাশে থাকবেন প্রত্যাশা করি। এই সংখ্যায় বিজ্ঞ লেখকগণের সঙ্গে একেবারে নবীন লেখকগণের লেখা রয়েছে। নবীনদেরকে উৎসাহ যোগাতে আমাদের এই প্রয়াস সকল সময়েই অব্যাহত থাকবে। পাঠাভ্যাস মানুষের চিন্তার গভীরতা বাড়ায় এবং বিস্তৃত করে কল্পনার জগৎ। বর্তমানে বেশিরভাগ লোকজন মোবাইল অ্যাপস, ট্যাবলেট, নিউজ এগ্রিগেটর, ইবুক রিডার এবং অন্যান্য অনলাইন গেজেটে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। ডিজিটাল বিশ্বে এগুলোতে অভ্যস্ত হওয়া খুবই স্বাভাবিক, তবে কাগজের উপর ছাপা কালিতে পড়ার সুখ একেবারেই আলাদা।
Abul Kasem- ১ জুলাই ১৯৫৫ কুমিল্লা জেলার সদর উপজেলার ঝাঁকুনি-পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন শেষে সরকারি কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে প্রবেশ করেন। বর্তমানে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব। ছাত্র অবস্থা থেকেই তিনি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। তখন থেকে দেশ-বিদেশের পত্র-পত্রিকায় তাঁর প্রবন্ধ, গবেষণাপ্রবন্ধ, ছোটগল্প, সমালোচনামূলক প্রবন্ধ প্রভৃতি প্রকাশিত হয়ে আসছে। কথাসাহিত্যে তার বিচরণ বেশি। সেখানে তিনি অতীত ইতিহাসের অমীয় উপাদানের সন্ধান করেছেন, সমৃদ্ধ করেছেন ইতিহাস আশ্রয়ী বাংলা সাহিত্যকে। ক্যাপ্টেন কক্স, অজেয় এবং সরহপা সে ধরনের উপন্যাস। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কিছু বই রয়েছে তাঁর। মুক্তিযুদ্ধে কুমিল্লা, মুক্তিযুদ্ধে জয়পুরহাটে ছাড়াও রয়েছে মুক্তির মন্দির সোপানতলের মতো হৃদয়স্পর্শীর মুক্তিযুদ্ধের গল্পের বই। ইতিহাস বইগুলো আঞ্চলিক ও জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে আছে। তাঁর গবেষণাপ্রবন্ধে সমকালীন বিশ্বসাহিত্যের একটি বিশেষ ধারার গভীরতর চিন্তাধর্মী বিষয়গুলো যেমনÑ অস্তিত্ববাদ, পরাবাস্তববাদ, চেতনাপ্রবাহরীতি, অ্যাবসার্ডিটি প্রাধান্য পেয়েছে। চা শিল্পের ইতিহাস, বিজ্ঞান, অর্থনীতি ও সাহিত্য নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। বাংলা ভাষায় তা শুধু ব্যতিক্রমই নয়, অনন্য সাধারণও। তাঁর চা শিল্পের ইতিহাস কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২০। কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদকসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।