ভূমিকা বাঙালির আবেগ-মননশীলতা, সংগ্রাম-সংঘর্ষ-বিপ্লবের পাশাপাশি রয়েছে তার শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির গৌরব ও বিয়োগান্তক ইতিহাসও। এই ইতিহাস দীর্ঘদিনের। এই ইতিহাসে যেমন ছাপ রেখেছেন বাঙালির প্রথম আধুনিক কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, তেমনি পরবর্তী সময়ে বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলামও। অন্যদিকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যেমন প্রাণবিসর্জন দিয়ে দেশের স্বাধীনতাকে তরান্বিত করে গেছেন বিপ্লবী বাঘা যতীন, তেমনি সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাঙালিকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ভূখ-, তথা রাষ্ট্র উপহার দিয়ে গেছেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলা ভাষার প্রথম বিদ্রোহী কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। কেননা তিনিই প্রথম বাংলায় গীতল-লালিত্যপূর্ণ কাব্যভাষার বিপরীতে তীর্যক-দৃঢ় ওজস্বী ভাষায় মহাকাব্য রচনা করেছেন। এমনকি তিনি মিত্রাক্ষর রীতির বিপরীতে অমিত্রাক্ষরের প্রচলন করেছিলেন। অন্যদিকে বাঙালির দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি যেমন সাহিত্যিক দ্রোহ করেছেন, তেমনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনেও রাজনৈতিকভাবে কখনো সক্রিয়, কখনো নেপথ্যে ভূমিকা রাখেন। এই অর্থে দুই কবিই বিদ্রোহী কবি। আবার তাদের জীবন যেমন বৈচিত্র্যপূর্ণ, তেমনি শেষ জীবনের দুজনই করুণ পরিণতির শিকার হয়েছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাঘা যতীন স্বাধীনতা আন্দোলনে বিপ্লব করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন। যদিও তিনি দেশের স্বাধীনতার সূর্য দেখে যেতে পারেননি। অন্যদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনসহ সারাজীবন দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতি সর্বপরি স্বাধীনতা আন্দোলনে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। দেশ স্বাধীনের কিছুদিন পর তাকে স্বদেশেরই কিছু বিপথগামী ষড়যন্ত্রকারীর হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে। এই হিসেবে বাঙালির এই চার জাতীয় নায়ককেই ট্র্যাজিক পরিণতির শিকার হতে হয়েছে। বিষয়টিতে কাকতাল দেখার কোনো সুযোগ নেই। এটি সুদূর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের ফল। বাঙালিকে বিদেশিরা চিরকাল করায়ত্ত করে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু বারবারই একেকজন বাঙালি নায়ক সবার ওপর দিয়ে নিজের শৌর্যবীর্যে এতটাই উচ্চতায় পৌঁছে গেছেন যে, তাদের সামনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হতে হয়েছে। তাই দেশি-বিদেশি পরাজিত অপশক্তিগুলো বারবার বাঙালির শ্রেষ্ঠ নায়কদের ওপর তাদের হিংস্র নখের থাবা বসিয়েছে। এই ট্র্যাজিক পরিণতির শিকার নায়কদের মধ্যে বিপ্লবী বাঘা যতীন ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্যতম। আবার কখনো কখনো ভাগ্য কোনো কোনো বাঙালি নায়কের ওপর বিরূপ আচরণ করেছে। এদিক থেকে মাইকেল মধুসূদন দত্ত ও কাজী নজরুল ইসলাম অভিন্ন পরিণতির শিকার। এছাড়া বাঙালির আরও অনেক ট্র্যাজিক নায়ক রয়েছেন। কিন্তু এই গ্রন্থে আমি এই চারজনকে নির্বাচন করেছি বিশেষ কারণে। এই চারজনের কর্ম ও জীবন, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ অন্য সব ট্র্যাজিক নায়কের কীর্তি ও পরিণতিকে ছাপিয়ে গেছে। এই কারণে এই চারজনকে নিয়েই আমার বর্তমান গ্রন্থ। এই চার জনের জীবন, কর্ম ও জীবনের পরিণতি নিয়ে আমার বর্তমান গ্রন্থ। এই গ্রন্থ রচনায় তথ্য ও বইপত্র দিয়ে নানা সময়ে সহযোগিতা করেছেন নর্দান বিশ^বিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, আমার শিক্ষক প্রখ্যাত কবি-গবেষক-অধ্যাপক ড. অনীক মাহমুদ ও শিল্প-সাহিত্যমনস্ক ব্যক্তিত্ব এ এস এম কামাল উদ্দিন। তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা অন্তহীন। এছাড়া প্রি-প্রেস কাজে বিশেষভাবে সহযোগিতা করেছেন আমার প্রিয় ছাত্র কবি-গবেষক-প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ নূরুল হক। তার সঙ্গে আমার যে ধরনের সম্পর্ক, তাতে তাকে ধন্যবাদ দিলে সম্পর্কেরই অবমূল্যায়ন করা হবে। এছাড়াও সবসময়ই আমার দাম্পত্যসঙ্গী খুর্শিদা বারী মিলি ও কন্যা কাব্য হাসানের কাছ থেকে অবিশ্বাস্যরকম সহযোগিতা পাই। লেখক ও গীতিকবি অনুজ মিলন হাসানের সহযোগিতা বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। এদের প্রত্যেকের সঙ্গে আমার যে সম্পর্ক তা ধন্যবাদের ঊর্ধ্বে। বইটি প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন গ্রাফোসম্যান পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী ও শ্রদ্ধাভাজন আব্দুর রউফ। তিনি ব্যক্তিগতভাবে আমাদের পারিবারিক অভিভাবক। তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
ইনফরমেশন এবং কমিউনিকেশন টেকনোলজি ও কম্পিউটারের এর নানা বিষয় নিয়ে বিশেষ জ্ঞানসম্পন্ন একজন লেখক হলেন রকিবুল হাসান। বর্তমান যুগ হলো যোগাযোগ বিজ্ঞানের স্বর্ণযুগ। পুরো বিশ্ব চলছে বিভিন্ন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর ভর করে এবং কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করছে বিশ্বের প্রায় সবকিছু। পৃথিবীর যেকোনো স্থানের যেকোনো মানুষের জীবনে কম্পিউটার ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। আর তাই এখন সকল শিক্ষিত মানুষেরই কম্পিউটার এবং অন্যান্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে থাকা প্রয়োজন বিশদ জ্ঞান। আর এসকল জ্ঞান সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই রচিত হয়েছে রকিবুল হাসান এর বই সমূহ। ১৯৭০ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করা এই লেখক শিক্ষাজীবন পার করেছেন ক্যাডেট কলেজে৷ ছোটবেলা থেকেই রেডিও কমিউনিকেশন নিয়ে অগাধ ভালোবাসা তাঁর। আর এরই সূত্রে ছুটিতে এলে বাসায় নিয়মিত তৈরি করতেন আরঅ্যান্ডডি ল্যাব, চাকরিজীবী বাবা-মায়ের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে। ফিউজ উড়ানো ও বাসায় আগুন লাগিয়ে দেয়া ছিল তাঁর নিয়মিত কাজ। তবে ইলেকট্রনিক কমিনিউকেশনের প্রতি ভালোবাসাই একসময় তাঁকে সাহায্য করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এর সিগন্যাল কোরে যোগ দিতে। তিনি সবসময় নতুন নতুন বিষয় শিখতে চান এবং এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ব্যক্তিগত অথবা সরকারিভাবে অংশ নিয়েছেন সত্তরটিরও অধিক ট্রেনিংয়ে, যার মধ্যে রয়েছে আমেরিকান সেনাবাহিনীর সিগন্যাল স্কুলের কোর্স এবং ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির 'লার্নিং হাউ টু লার্ন' কোর্স। ডেটা বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা অনেক, যা তাঁকে সাহায্য করেছে জাতীয় স্কেলে এদেশের টেলিকম অপারেটরগুলোর 'ইন্টারকানেকশন ভয়েস কল কস্ট মডেলিং' তৈরিতে সহযোগিতা করতে৷ তাঁর রয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনে কাজ করার অভিজ্ঞতা। আর এসকল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতেই তিনি লিখেছেন বই। রকিবুল হাসান এর বই সমগ্রতে আছে 'হাতেকলমে মেশিন লার্নিং' ও 'শূন্য থেকে পাইথন মেশিন লার্নিং: হাতেকলমে সাইকিট-লার্ন'। তাঁর রচিত এসকল বই সকলকে সাহায্য করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত নানা বিষয় সম্পর্কে সহজে জানতে ও এগুলো নিয়ে সহজে কাজ করতে।