বাঙ্গালি কবি যদি গ্রেকো-রোমান সভ্যতা, ইতিহাস, মিথ ও হিন্দু পুরাণকেন্দ্রিক কবিতা রচনা করতে পারে তাহলে বাঙ্গালি মুসলমান কবি কেন ইসলামিক বিষয়, তথা মুসলমানের ইতিহাস, ঐতিহ্য, তার ইবাদতকেন্দ্রিক জীবন, অনুষঙ্গ কবিতায় ব্যবহার করতে পারবে না? আমাদের ভাবতে হবে- আজকের যে বাংলা ভাষায় আমরা কথা বলি তার পেছনে ভারতবর্ষের মুসলমান বিশেষ করে সুলতানি আমলের শাসকদের অবদানই সবচেয়ে বেশি। তারা যদি এর পৃষ্ঠপোষকতা না করত তাহলে আমি, আপনি আজ বাংলা ভাষায় হয়তো এমনভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারতাম না। সংস্কৃত ভাষার হিন্দু পুরোহিত আর শাসকদের চাপেই এই ভাষা হারায়া যাইত। কারণ ভাষা ব্যবহার- রাজনৈতিক ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক (মিশেল ফুকো)। উগ্র বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের কারণে পয়দা হওয়া অজ্ঞতা থেকে এখনকার সাহিত্য ও সংস্কৃতিসেবীদের একাংশ বুঝতে পারে না যে, মুসলমান সমাজের জন্য ইসলামিক জীবন ব্যবস্থা- তথা কোরান ও সুন্নাহবাহিত জীবন ব্যবস্থা তাদের ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য ও জীবন্ত অংশ। একজন বাঙ্গালি মুসলমান কবি সাহিত্যিক এইসবের মধ্যেই বড় হয়, চিন্তা করে এবং ভাব প্রকাশ করে। এই বুঝতে না পারাই বা সত্যকে গ্রহণ না করার কারণেই বাংলাদেশে উগ্র বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ ও সেকুলার আদর্শে গড়ে ওঠা কবি, সাহিত্যিক ও শিল্প ও সাংস্কৃতিক দলের মধ্যে ইসলামবিদ্বেষ চালু আছে। এই বইতে এসবের বিচার, বিশ্লেষণ, প্রশ্ন ও উত্তর মননশীল গদ্যে উপস্থাপন করা হয়েছে।
জন্ম: ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫; কিশোরগঞ্জ। পৈর্তৃক নিবাস: রায়পুরা, নরসিংদী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স), এমএ। পেশা: ইংরেজির শিক্ষক, TAFE NSW.