ভূত নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই! পাশ্চাত্য কিংবা প্রাচ্য-ভূত নিয়ে কৌতূহল যেন সবার। আমাদের অবচেতন মন বা কল্পনায় যেমন ভূত নিয়ে আকর্ষণ এবং ভয় যেন চিরায়ত আর তাইতো পাশ্চাত্য সমাজ ভূতকে নিয়ে পালন করে ‘হ্যালোইন ডে'। যদিও সমাজে বিদ্যুতের আবির্ভাবের সাথে সাথে ভৌতিক কেচ্ছা-কাহিনী সব পালিয়ে যাচ্ছে। এর কিছুটা প্রভাব পড়েছে আমাদের সাহিত্যেও। ভৌতিক সাহিত্যের স্থলে জায়গা করে নিচ্ছে ‘সাইন্স ফিকশন'। কিন্তু এখনো ভৌতিক সাহিত্যের কদর কমে যায়নি। তাই চলুন জেনে নেই বাংলা ভাষার কিছু ভৌতিক সাহিত্য সম্পর্কে। ‘ইলিশ ভূত' নাম থেকেই বোঝা যায়, মাছের সাথে এই ভূতের বেশ দহরম-মহরম সম্পর্ক। তাই এদের বাসও গ্রামাঞ্চলের সেসব জলাশয়ের আশেপাশে, যেখানে মাছ পাওয়া যায়। তবে শহরেও এরা থাকে না যে, তা নয়। বিশেষত রাতের বেলা মাছ কিনে ঘরে ফিরতে গেলে মেছোভূতের দর্শন পাবার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। মাছ খেতে এরা এতই ভালোবাসে যে লোকের ঘরে ঢুকে চুরি করতেও পিছপা হয় না। বাঙালি এমনিতেই মাছেভাতে মজে, তাই এই ভূতটি পুরাদস্তুর বাঙালি খাদ্যরসে প্রস্তুত। শ্যাওড়া গাছ নিত্যদিন কাটা পড়ছে, গ্রামেও আগের মতো আঁধার নেই। ভূতেরা হয়তো বাসস্থান নিয়ে বেশ সংকটে পড়ে আজকাল শহরমুখী হচ্ছে। হয়তোবা ব্রহ্মদৈত্য ধুতি ছেড়ে প্যান্ট-শার্ট পরছে, শাকচুন্নির ফ্যাশন সেন্স একটু উন্নত হচ্ছে। স্কন্ধকাটা মাথা খোঁজার অভিযান ছেড়ে দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে এখন পর্যন্ত হেড ট্রান্সপ্ল্যান্ট করিয়েছে কি না, সে খবর পাওয়া যায়নি! ‘ভূত' শব্দের অর্থ অতীত। তাই বেশিরভাগ ভূতকে দেখা যায় মৃত। তারা অতীতের জগত থেকে বর্তমানে ঢুঁ মারতে চায়। মানুষ তার অতীতকে যতটা ভালোবাসে, ততটা ভয়ও পায়—এমন ধারণা থেকেও ভূতের উত্থান ঘটতে পারে। তবে যেভাবেই আবির্ভাব ঘটুক, বাংলা সাহিত্যে ভূতদের পরাক্রম সবসময়ই বেশ জোরালো। যা ব্যাখ্যা করা যায় না, যার যুক্তি নেই, সে জগতে রোমাঞ্চ অনুভব করতে পাঠকদের কাছে ‘ইলিশ ভূতের' ভূতেরা ভয়ানক হলেও বেশ জনপ্রিয় হবে বলে আমার বিশ্বাস ।
সাহিদা বেগম ১৯৫৫ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বিনারচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা- মরহুম আলহাজ্ব আনােয়ার আলী ভুঞা ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। মা আলহাজ্ব হাসনা হেনা বেগম গৃহিণী। গবেষকপ্রাবন্ধিক ও আইনজীবী সাহিদা বেগম ১৯৭০ সালে গাইবান্ধা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৭৩ সালে সিদ্ধেশ্বরী মহিলা মহাবিদ্যালয় ঢাকা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্মান (বাংলা সাহিত্য) ১৯৭৫ এবং ১৯৭৬ সালে লাভ করেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। ১৯৮৪ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেন এন এন বি ডিগ্রি। কর্মজীবন : ১৯৮৫ সালে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ঢাকা বারে যােগ দিয়ে ১৯৮৮ সালে যােগ দেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বারে । অদ্যাবধি আইন পেশায় নিয়ােজিত আছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের সহকারী এটর্নী জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্বদেশ, ইতিহাস এবং মুক্তিযুদ্ধ সাহিদা বেগমের রচনার মূল বিষয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তাঁর রচনার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। এ পর্যন্ত। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ১৬টি গ্রন্থসহ ৬৯টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম গ্রন্থ যুদ্ধে যুদ্ধে নয় মাস ১৯৮৪ সালে বছরব্যাপী ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।