প্রসঙ্গ কথা বাংলাদেশ : রক্তাক্ত অধ্যায় ১৯৭৫ সনের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ক্ষমতার কলকাঠি থাকে সেনানিবাসে। এই ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে ঘটে যায় ছোট বড় ২১টি সামরিক অভ্যুত্থান। প্রতিটি ঘটনায় দেশের বহু কৃর্তীমান সেনা সদস্য প্রাণ হারান। ১৯৮১ সনের ৩০ শে মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এক সামরিক অভ্যূত্থানে প্রাণ হারান। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এ অভ্যুত্থানের নায়ক মেজর জেনারেল এম এ মঞ্জুকেও সৈনিকদের হাতে প্রাণ দিতে হয়। এ অভ্যুত্থানগুলো অধিকাংশ ঘটার সময় লেখক ব্রিগেডিয়ার সাখায়াত হোসেন এনডিসি, পিএসসি (অবঃ) ঘটনাবলী অতি কাছে থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। তাঁর দেখা অভিজ্ঞতা তিনি বইটিতে সবিস্তারে লিখেছেন। বইটিতে আছে- *বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সশস্ত্রবাহিনীর অভ্যন্তরের কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল? *বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীরা কিভাবে বিদেশে পালিয়ে যায় এবং বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ মিশনে কিভাবে চাকুরী পায়? *জিয়াউর রহমান কি ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডে জড়িত ছিলেন? *খালেদা মোশারফ কি ভারতের অনুচর ছিলেন? *কর্নেল (অবঃ) তাহেরকে কেন ফাঁসী দেয়া হয়? *জিয়াউর রহমানের শাসন আমলে কতটি সামরিক অভ্যূত্থান হয়? এতে কারা জড়িত ছিলেন এবং কতজন প্রাণ হারান? *মেজর জেনারেল এম এ মঞ্জুর এবং মেজর জেনারেল শওকত আলীর ঠান্ডা লড়াই। *জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেও মঞ্জুর কেন নিজের জীবন বাঁচাতে পারলেন না? এবং *হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ক্ষমতা দখলের নেপথ্যে অনেক তথ্যবহুল ঘটনা এই বইটি হুবহু বর্ণনা রয়েছে। এছাড়া অনিচ্ছাসত্বেও কিভাবে সশস্ত্রবাহিনী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে এবং সশস্ত্রবাহিনীর রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ রোধে রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের কি করণীয় ছিল, সামরিক বাহিনীকে কিভাবে ক্ষমতা দখল থেকে বিরত রাখা যায় তার একটি সমাধানের পথও রয়েছে এই বইটিতে। অনুসন্ধানী ও জ্ঞান পিপাসু পাঠকদের জন্য তথ্য সমৃদ্ধ এই বইটি যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।
Brigedier J.M. Sakaoat Hosen Ret. ১৯৪৮ সনের ১ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সনে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় দু’বছর পাকিস্তানের বন্দি শিবিরে কাটিয়ে ১৯৭৩ সনে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৯৭৫ সনের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৪৬ ব্রিগেডে স্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৭৯-৮১ সনে ঢাকায় সেনাসদরে গুরুত্বপূর্ণ পদে অপারেশন ডাইরেক্টরেট নিয়োজিত হন। পরে তিনি ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দুটি ইনফেনট্রি ব্রিগেড ও একটি আর্টিলারি ব্রিগেডের অধিনায়ক ছিলেন। লেখক বাংলাদেশের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করে দ্বিতীয়বারের মত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিখ্যাত ইউ এস এ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ জেনারেল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তিনি পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিফেন্স এ ডি সি ইসলামাবাদ ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে মাস্টার্স এবং ২০১১ সনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্, ঢাকা থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিরাপত্তা, ভূ-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী কলাম ও বইয়ের লেখক হিসেবে অধিক পরিচিত। এ পর্যন্ত তার তেইশটি বহুল পঠিত বই প্রকাশিত হয়েছে। তা ছাড়া দেশী-বিদেশী ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতি এবং নির্বাচন বিষয়ে বিশ্লেষক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। ২০০৭ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রয়েছে। ২০০৮ সনের জাতীয় এবং স্থানীয় সরকারের পাঁচ হাজারের বেশি নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা।