ইতিহাস আশ্রিত একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ভ্রমণ কাহিনী বলতে যা বুঝায়,বইটি এককথায় তারই প্রতিচ্ছবি।লেখকের একবার কোলকাতা যাওয়া হলে ভারত ঘুরে দেখা হয় নি।২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে ভারতে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলেন লেখক এবং সে সাথে কিছু দিনের ছুটিও নিয়েছিলেন নিজের মনের সুপ্ত বাসনা পূরণ করবার লক্ষ্যে। ১৩২৪ সালের শীতকালের কথা।বাংলা অভিযান শেষ করে দিল্লি অভিমুখে রওনা দিয়েছেন তৎকালের ভারতের অধিপতি সুলতান গিয়াস উদ্দিন তুঘলক।ফরমানও জারি করেছিলেন সেখানে পৌঁছে যেন তিনি নিজামউদ্দিন আউলিয়াকে আর দেখতে না পান।শুনে মুচকি হেসে সুফি দরবেশ বলেছিলেন,'হনুজ,দিল্লি দূর অর্থাৎ দিল্লি এখনও বহুদূর। ২০০৯ সালে সেই ইতিহাস সমৃদ্ধ নগর দিল্লীতে পা রাখেন লেখক তার সহধর্মিণী সহ এবং আর এক নির্বাচন কমিশনারও ছিলো সেই যাত্রায় নাম,জনাব মুহম্মদ ছহুল হুসাইন।সফরে দিল্লি, আগ্রা,জয়পুর,আজমীর ভ্রমণে গিয়েছিলন লেখক।সেই সাথে বর্ণনা করেছেন এসকল স্থানের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস।ভারতীয় নির্বাচন কমিশন এবং ২০০৯ সালের নির্বাচন সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনাও রয়েছে এখানে।এই উপমহাদেশের ছোটোবড়ো সকল ইতিহাসে স্থান পাওয়া ঘটনাতেই দিল্লির নাম রয়েছে।পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি তাজমহল ভ্রমণ নিয়েও লেখক আলেচনা আছে।পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম জামজমক সমাধিসৌধ আর চোখে পরে না। ক্ষমতার মারপ্যাঁচে সম্রাট শাজাহানের করুন কাহিনী,ভাইদের মধ্যে মসনদ নিয়ে লড়াই কিংবা তাজমহলের তীর ঘেঁষে বয়ে চলা যমুনা,হুমায়ুনের সমাধি,চাঁদনি চক সবই স্থান পেয়েছে আলেচনায়।ইতিহাসের বিস্তৃত বর্ণনায় বইটি আগাগোড়া মোড়া এককথায়।ভ্রমণের পথে প্রান্তরে যত ইতিহাস সামনে এসেছে,লেখক তার সবই তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন বইটিতে।পাঠক প্রতিটি পাতায় আবিস্কার করতে সক্ষম হবেন অসংখ্য অজানা তথ্যের। সাবলীলভাবে বর্ণনা লেখকের এক অনন্য গুন।এখানেও তার ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় না।অতি সহজেই শত বছরের ইতিহাসের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলবে যেকোনো পাঠক!
Brigedier J.M. Sakaoat Hosen Ret. ১৯৪৮ সনের ১ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সনে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় দু’বছর পাকিস্তানের বন্দি শিবিরে কাটিয়ে ১৯৭৩ সনে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৯৭৫ সনের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৪৬ ব্রিগেডে স্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৭৯-৮১ সনে ঢাকায় সেনাসদরে গুরুত্বপূর্ণ পদে অপারেশন ডাইরেক্টরেট নিয়োজিত হন। পরে তিনি ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দুটি ইনফেনট্রি ব্রিগেড ও একটি আর্টিলারি ব্রিগেডের অধিনায়ক ছিলেন। লেখক বাংলাদেশের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করে দ্বিতীয়বারের মত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিখ্যাত ইউ এস এ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ জেনারেল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তিনি পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিফেন্স এ ডি সি ইসলামাবাদ ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে মাস্টার্স এবং ২০১১ সনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্, ঢাকা থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিরাপত্তা, ভূ-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী কলাম ও বইয়ের লেখক হিসেবে অধিক পরিচিত। এ পর্যন্ত তার তেইশটি বহুল পঠিত বই প্রকাশিত হয়েছে। তা ছাড়া দেশী-বিদেশী ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতি এবং নির্বাচন বিষয়ে বিশ্লেষক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। ২০০৭ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রয়েছে। ২০০৮ সনের জাতীয় এবং স্থানীয় সরকারের পাঁচ হাজারের বেশি নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা।