দর্শনের ইতিহাসে সন্দেহাতীতভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অন্যতম গ্রীক দার্শনিক প্লেটো সম্পর্কে বিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের অভিমত ও মূল্যায়নের গুরুত্ব নিয়ে কোনাে বিতর্কের অবকাশ নেই। রাসেল তার বিখ্যাত ‘হিস্টরি অব ওয়েস্টার্ন ফিলােসফি’ গ্রন্থে ছয়টি আলাদা আলাদা প্রবন্ধে প্লেটোর দার্শনিক, রাজনৈতিক ও নৈতিক চিন্তাভাবনার পর্যালােচনা ও মূল্যায়ন করেছেন সহজ সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষায়। বর্তমান গ্রন্থটি রাসেলের সেই ছয়টি প্রবন্ধের অনুবাদ। বাংলা ভাষাভাষী দর্শনের ছাত্র শিক্ষক এবং সাধারণ দর্শন-অনুরাগীদের জন্য অনূদিত এই প্রবন্ধগুলি প্লেটোকে বুঝতে সহায়ক হবে। আর প্লেটো শুধু একজন ব্যক্তি-দার্শনিক বলে নয়, তার সময়ে তার দেশ সমাজ এবং পরবর্তী প্রায় দুই হাজার বছর ধরে সমগ্র পৃথিবীর মননশীলতায়, নৈতিকতায়, ধর্মচিন্তায়, বিজ্ঞানচর্চায় এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার যে প্রবল প্রভাব পড়েছে এবং এখনাে যে-প্রভাবের অনেকটা অটুট রয়েছে, সে বিবেচনায়ও আধুনিক মানুষের জন্য প্লেটোকে অনুধাবন ও উপলব্ধি করা জরুরি। প্রাচ্যে এবং পাশ্চাত্যে ভিন্ন ভিন্ন ভাবনাপ্রবণতা ও চিন্তা পদ্ধতির কারণে প্লেটোকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনা ও উপলব্ধি করার প্রয়াস লক্ষণীয়। ভিন্ন ভিন্ন, এমন কি বিপরীত দৃষ্টিকোণ থেকেও প্লেটোকে বিচার করার প্রবণতা বিদ্যমান। প্লেটোকে নিয়ে তাই আলােচনা এত বিপুল ও বহুমুখী। এই বিপুল ও বহুমুখী আলােচনার খুব সামান্যই অবশ্য বাংলা ভাষায় পাওয়া যায়। প্লেটো সম্পর্কে বার্ট্রান্ড রাসেলের অভিমত ও পর্যালােচনার এই বঙ্গানুবাদ শুধু প্লেটোকেই বিশদ জানার সুযােগ করে দিল না, বাংলায় দর্শনালােচনার জগতের সীমাহীন দৈন্যের কিছুটা অন্তত দূর করল। রাসেলের ইংরেজি গদ্যের অসাধারণ প্রাঞ্জলতা এবং আলােচনার সহজবােধ্যতা ও সুখপাঠ্যতা বাংলায় অটুট রাখার দুঃসাধ্য কাজটি সম্পাদিত হয়েছে। অনুবাদকের হাতে। উদার যুক্তিবাদী ইতিহাসনিষ্ঠ আধুনিক দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের দৃষ্টিতে প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক প্লেটোর আধা-যুক্তিবাদিতা ও আধা-মরমীবাদ যেভাবে ধরা পড়েছে এবং রাসেল যে-ভাষায় তা পণ্ডিত-অপণ্ডিত নির্বিশেষে সকল সাধারণ জ্ঞানানুরাগীর জন্য প্রকাশ করেছেন, তার বঙ্গানুবাদ বাংলা ভাষার শক্তিমত্তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
Title
প্লেটোর ইউটোপিয়া ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের বই)
জন্ম বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা জয়পুরহাটে । মস্কোর পাত্রিস লুমুম্বা। গণমৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৯৩ সালে দেশে ফিরে সাংবাদিকতা শুরু। করেন। বর্তমানে প্রথম আলাের জ্যেষ্ঠ। সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত। গল্প। লেখার শুরু ১৯৮০-র দশকে। তাঁর লেখা উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযােগ্য তনুশ্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় রাত, ঘােড়ামাসুদ, জুবােফস্কি বুলভার, মাংসের কারবার, পাকিস্তান, দ্বিতীয় খুনের কাহিনি, যেভাবে নাই হয়ে গেলাম, ব্লগার ও অন্যান্য গল্প, বাংলা দেশ ও অন্যান্য গল্প এবং দুধ। তাঁর গল্প ‘দুধ’ শবনম নাদিয়ার অনুবাদে “মিল্ক’ নামে শ্রীলঙ্কাভিত্তিক হিমাল সাউদেশিয়ান শর্ট স্টোরি কমপিটিশন ২০১৯-এ শ্রেষ্ঠ গল্প হিসেবে পুরস্কৃত হয়। একই অনুবাদকের অনুবাদে দ্য মিট মার্কেট অ্যান্ড আদার স্টোরিজনামে তাঁর ইংরেজিতে প্রকাশিতব্য গল্পগ্রন্থ ২০২০ সালের আমেরিকান পেন/হাইম ট্রান্সলেশন। ফান্ড গ্র্যান্টস লাভ করে ।