নীতিবিদ্যা বিষয়ক এই গ্রন্থটিতে প্রাচীন এবং আধুনিক কালের নীতিবিদদের সম্পর্কে একটি ধারণা দেবার চেষ্টা করা হয়েছে। পাণ্ডুলিপির কাঠামো তৈরি করতে গিয়ে গ্রন্থেও পরিধিকে মোট তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। গ্রন্থের প্রথম ভাগে নীতিবিদ্যার সংজ্ঞা, বিষয়বস্তু ও এর স্বরূপ প্রসঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা করা হয়েছে। নীতিবিদ্যা কী? অনেক সময় নীতিবিদ্যাকে বিজ্ঞান হিসেবে দেখা হয়-বাস্তবিক অর্থে এটি কী ধরনের বিজ্ঞান? এবং নীতিবিদ্যার আলোচ্য বিষয় কী? গ্রন্থেও প্রথম ভাগে এসব প্রশ্নের যথার্থ উত্তর অনুসন্ধান করার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। গ্রন্থের দ্বিতীয় ভাগে নীতিভাবনার উদ্ভব এবং হোমারীয় কাব্যিক উপকথা কীভাবে গ্রিক নীতিদর্শনকে প্রভাবিত করেছে তা আলোচনা প্রসঙ্গে গ্রিক নীতিবিদ্যার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোকপাত করার সযত্ন প্রয়াস গৃহীত হয়েছে। গ্রিক দার্শনিকদের নীতিভাবনার বিকাশ পর্যায়ক্রমিক আলোচনা করতে গিয়ে ডেমোক্রিটাসের পরমাণুবাদে, জড়বাদী হিরাক্লিটাসের তত্ত্ববিদ্যায়, পিথাগোরাসের সংখ্যাতত্ত্বে নীতিভাবনার ভিন্ন আঙ্গিক অনুসন্ধান করার চেষ্টা নেয়া হয়েছে। গ্রন্থের এই ভাগে প্লেটো ও এরিস্টটলের নীতিচিন্তার বিস্তৃত আলোচনা করা হয়েছে। গ্রন্থের তৃতীয় ভাগে মূলত আধুনিক কালের নীতিবিদদের নৈতিক মানদণ্ডসমূহ আলোচনা করা হয়েছে। আধুনিক ব্রিটেনের আইন সংস্কার তথা সামাজিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা দার্শনিক সুখবাদ যা উপযোগবাদ নামে সমধিক পরিচিত-এর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দিকের ওপর আলোচনার পাশাপাশি ব্রিটেনের আরেক জন উপযোগবাদী জন স্টুয়ার্ট মিলের উপযোগবাদ সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। পরবর্তী অধ্যায়টি আদর্শনিষ্ঠ নীতিবিদ্যা সাপেক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায় সুখবাদ-সমকালীন নীতিদার্শনিক ম্যূওরের ভাষায় প্রকৃতিবাদ-এর বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমালোচনা ও এর যৌক্তিকতা পর্যালোচনা করা হয়েছে। তাঁর পরবর্তী তিনটি অধ্যায়ে কান্টের নীতিবিদ্যা, পূর্ণতাবাদ ও স্বজ্ঞাবাদের সমালোচনাসহ প্রাথমিক ধারণা প্রদান করা হয়েছে। গ্রন্থটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের স্নাতক (পাস) ও স্নাতক সম্মান (দর্শন) শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রচিত।