বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানী ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের স্পন্দন। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টিজাত আলোক-বর্তিকা ছিলেন এই অকুতোভয় সমরনায়ক। দৃঢ় প্রত্যয় ও দূরদর্শিতার সাথে মুক্তিযুদ্ধকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তিনি অতুল ধৈর্য, কৌশল ও বুদ্ধিমত্তার সাথে আদ্যোপান্ত কাজ করে নিজেকে ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত করেছেন। এ যুদ্ধকে দিকভ্রান্ত করার জন্য দেশী-বিদেশী নানা দুষ্টচক্র সক্রিয় ছিল তা সবারই জানা। তাদের ছোবল থেকে দেশকে রক্ষার জন্য প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সার্বক্ষণিক সহচর হিসেবে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় অহর্নিশি কাজ করেছেন বঙ্গবীর জেনারেল ওসমানী। অথচ যুদ্ধকালের ন্যায় আজও সেই অশুভ শক্তি প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে তাঁর অবদানকে খাটো করার জন্য ক্রিয়াশীল বয়েছে। নিঃসন্দেহে তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক। যথেষ্ট দালিলিক প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এখনও এ বিষয়ে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টির পায়তারা হয়। কেউ কেউ তাঁর সর্বজন স্বীকৃত 'বঙ্গবীর' উপাধি নির্লজ্জভাবে ব্যবহার করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। মুক্তিযুদ্ধের যৌথ নেতৃত্ব এবং আত্মসমর্পন পর্বে আমাদের অপ্রাপ্তির যন্ত্রনাকে আজও শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো আড়াল করার। চেষ্টা চলে অবলীলায়। নানা তথ্য-উপাত্ত উল্লেখপূর্বক ইতিহাসের অনেক বিকৃতি চিহ্নিত ও সঠিক তথ্য পরিবেশনসহ যৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে বঙ্গবীর জেনারেল ওসমানীর প্রকৃত মূল্যায়নের চেষ্টা করা হয়েছে এ গ্রন্থে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে বঙ্গবীর জেনারেল ওসমানী। একটি প্রতায় একটি ইতিহাস গ্রন্থটি একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গণ্য হওয়ার দাবি রাখে।