একটু চোখ খুলে দেখুন তো, এই সমাজে যারা পাপ ছড়াচ্ছে, পাপ করছে তারা কি আদতেও সুখের জীবন কাটাচ্ছে? তারা কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। অদৃশ্য এক ব্যক্তির আদেশের পিছে ছুটছে। তাদের খাওয়া-দাওয়ার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। তাদের জীবনযাত্রার কোনো নির্দিষ্ট অবস্থা নেই। তাদের কোনো স্বাধীনতা নেই। থাকার মধ্যে আছে শুধু কিছু টাকা আর ক্ষমতা। সেটাও যে টিকে থাকবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাদের এই ক্ষমতা, সম্পদ টিকিয়ে রাখার দুশ্চিন্তা নিয়ে চলতে হয় পুরোটা সময়। একটা সময় এসে আপনি নিজেকে খুঁজে পাবেন একাকী, নিঃসঙ্গ হিসেবে। মানুষ একটা সময় নিজেও বুঝতে পারে না, সে কীভাবে কী করবে। পাপে নিমজ্জিত হয়ে সে এমন অবস্থানে যায় যে, সে বুঝতেও পারে না এই পাপ তাকে কীভাবে কুরে কুরে খাচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো নিজের পরিবার বা ভালো কোনো বন্ধুর সোহবতে এসে আবারও জীবনের অর্থ খুঁজে পায়। কিন্তু তত দিনে সে নিজের জীবনের বড় একটা অংশ নষ্ট করে ফেলেছে। এমন জীবন সে কাটিয়ে এসেছে যা নিয়ে কাউকে সে বলতেও পারে না। একজন মুসলিম তার জীবনের বেশির ভাগ সময় ফাহেশায় কাটিয়ে শেষ করেছে—এর মতো দুঃখজনক কিছুই হতে পারে না। খেয়াল করে দেখুন তো, কোনো পাপীকে কি কখনো সবার সামনে এসে বলতে শুনেছেন যে সে জিনা করে, ড্রাগসের ব্যাবসা করে, খুন-হত্যা-রাহাজানি করে, ছিনতাই করে? না, কেউই জনসম্মুখে এসব বলতে চায় না। কারণ সে তার এই পাপাচার নিয়ে সর্বদাই লজ্জায় থাকে। তারা চাইলেই নিজের পরিচয় সবার সামনে দিতে পারে না। এইসব লোকদের কখনো তার পেশা জিজ্ঞেস করলে সে আপনাকে নয়-ছয় বোঝাবে। তার কোনো ব্যাবসা আছে। কিন্তু সেই ব্যাবসা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা কিছু বলতে চায় না। কারণ তারা লজ্জা পায়। ইমাম হাসান আল-বসরি রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “মানুষ কত দামি বাহনে চড়ছে কিংবা কত সম্পত্তি জমা করছে, তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ তার চেহারায় পাপের জন্য অনুশোচনা থাকা। কারণ আল্লাহ এই পাপীদের জন্য শাস্তি নির্ধারণ করে রেখেছেন দুনিয়া ও আখিরাতে।”