চতুর্থ অধ্যায় সন্ধান ৯ খেদমত ৯ বিশ বৎসর ১২ উপস্থিতি ১৭ দরবারে ১৮ দ্বিতীয় ২০ সনজারে ২৪ আজমীরে ২৫ শাদীদের ২৭ আজপাল২৮ প্রচার ৩০ দাওয়াত ৩১ পঞ্চম অধ্যায় সুসংবাদ ৩২ মূলকেন্দে ৩২ যুদ্ধ ৩৪ দরবারে ৩৬ ষষ্ঠ অধ্যায় দিল্লি ভ্রমণ ৩৮ খাজা সাহেব (রহঃ) এর নিয়োগ ৩৯ চরিত্র এবং অভ্যাস ৪০ এবাদত এবং প্রার্থনা আরাধনা ৪১ সংগীত ৪২ উপকার ৪৩ দৃঢ় প্রত্যয় ৪৪ সিলসিলা ৪৫ প্রথম অধ্যায় বাল্যকাল খাজা খাজেগান হযরত খাজা মঈনুদ্দিন হাসান চিশ্তী আজমীর (রাহ.) মানজর প্রদেশের খোরাসান এলাকায় ৫৩৭ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। মানজর প্রদেশটি কান্দাহার থেকে উত্তরে ২৪ ঘন্টার রাস্তা, এবং আজও সেই গ্রামটি বিদ্যমান আছে। অনেক লোক উহাকে নিন্তাজ বলে। খাজা সাহেবের পিতার নাম সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন হাসান (রহ.), তিনি অষ্টম সিরিজে হযরত মুসা কাজেম (রহ.) নাতি, এবং মাতা সৈয়দা উম্মে ওয়ারা, ডাক নাম বিবি মানুর। যাহা কতিপয় সিলসিলার মাধ্যমে ইমাম হাসান (রাহ.) নাতিন। ইহার জন্যই উভয়ের দিক থেকে সৈয়দ বংশভুক্ত। খাজা সাহেবের মাতা হযরত উম্মে ওয়ারা থেকে বর্ণিত আছে যে, সে সময় থেকেই খাজা মঈনুদ্দিনের নূর আমার উদরে আসে তখন থেকেই আমার গৃহ খায়ের এবং বরকতে ভরপুর মনে হইতে লাগিল, যাহারা আমাদের শত্রæ ছিল তাহারাও মিত্রতে পরিণত হইল। অনেক সময় আমি উত্তম স্বপ্ন দেখিতেছিলাম। যখন থেকে খাজা মঈনের প্রাণ আল্লাহতায়ালা আমার উদরের ভিতর প্রেরণ করিলেন তখন থেকেই অনুমান হইতেছিল যে, অর্ধ রাত্র থেকে সকাল পর্যন্ত আমার উদর থেকে তাসবিহ এবং তাহলিলের শব্দ শুনা যাইত, আমি ঐ পবিত্র আওয়াজে অবাক হইয়া যাইতাম। যখন মঈনুদ্দিন জন্মগ্রহণ করে তখন আমার ঘর নূরে আলোকিত হয়। শিক্ষাদীক্ষা খাজা মঈনুদ্দিন (রাহ.) এর প্রাথমিক শিক্ষা গৃহেই হইয়াছিল। খাজা সাহেবের পিতা ছিলেন একজন বড় আলেম। খাজা সাহেব নয় বৎসর বয়সেই কোরান মজিদ মুখস্ত করিয়াছেন তৎপর মানজরের এক মকতবে ভর্তি হইলেন সেইখানে প্রাথমিকভাবে অত্যন্ত সর্তকতার সহিত তাফসির, ফেকা এবং হাদীসের শিক্ষা লাভ করিয়াছেন। অল্প সময়ের ভিতর তিনি যথেষ্ট বিদ্যা লাভ করিয়াছেন। দ্বিতীয় অধ্যায় পিতৃবিয়োগ খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রঃ) ১৪ বৎসর সময়ে পিতার সস্নেহ হইতে বঞ্চিত এবং এতিম হইলেন। উত্তরাধিকার সূত্রে পিতার সম্পত্তির হইতে একটি বাগান এবং একটি পান চাকি (সরাইখানা) লাভ করিয়াছেন। পিতার বিয়োগের কয়েক মাসের পর মাতাও নশ্বর জগত থেকে পরলোক গমন করেন। এই শংকাক‚ল অবস্থায় তাহার পায়ের তলার মাটি নাই। এমতাবস্থায় খাজা সাহেব অসহায় হইয়া গেলেন। এই সময় তাহার বয়স ১৫ ছিল। ওই অল্প বয়সেই পিতামাতার আদর-যতœ থেকে বঞ্চিত হওয়া সাধারণ কথা নয়, কিন্তু তিনি ধৈর্য ধারণ করিয়াছেন। তবুও পৃথিবীর প্রতি তাহার মন বিতৃষ্ণা ও অভক্তি এসে গেল। নিজেই সিদ্ধান্ত নিলেন যে, এই পৃথিবীটা কিছুই না। প্রকৃত শান্তি মানুষ তখনই লাভ করিবে যখন সে আল্লাহপাকের দরবারে উপস্থিত হইবে। ঐ রাস্তায় চলার জন্য একজন পথপ্রদর্শক ও একজন উপদেশদানকারী প্রয়োজন আছে। জীবিকা নির্বাহ করার জন্য শুধুমাত্র একটি বাগান ও একটি পানচুকি (সরাইখানা) ছিল। যাহা পিতার থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। খাজা মইনুদ্দিন চিশ্তী (রহঃ) নিজেই বাগানের দেখাশুনা করিতেন। উহাতে পানি দিতেন, কাটছাট করে পরিষ্কার করে রাখতেন। সার্বিক সম্ভব পন্থায় বৃক্ষসমূহ, ফুলগাছসমূহ এবং বাগানের পরিচর্যা করিতেন। ইহার মাধ্যমেই নিজে জীবনধারন করিতেন।