রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মনে করতেন গৌতম বুদ্ধই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। অনেকে বুদ্ধকে দেবতাজ্ঞানে পূজা করলেও রবীন্দ্রনাথ তাকে মানুষজ্ঞানেই ভক্তি করেছেন। তাঁর বিবেচনায় গৌতম বুদ্ধ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, কী কারণে গ্রাহ্য এসব প্রশ্নর জবাব খোঁজার চেষ্টা রয়েছে এই গ্রন্থে। রবীন্দ্রনাথের চেতনায় বৌদ্ধসংস্কৃতি কতটা প্রভাব বিস্তার করেছিল, এই সংস্কৃতির কী কী অনুষঙ্গ যুক্ত হয়েছিল তাঁর চেতনায়, তার অনপুঙ্খ বিবরণ দিতে চেষ্টা করা হয়েছে নির্মোহ আয়োজনে। রবীন্দ্রসাহিত্যে বৌদ্ধপ্রসঙ্গ কতটুকু প্রযুক্ত হয়েছে তারও অনুসন্ধান রয়েছে এখানে। এই সকল প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে রবীন্দ্রসাহিত্যে বৌদ্ধআখ্যান কীভাবে এসেছে, রবীন্দ্রনাথ কতটা গ্রহণ করেছেন, কতটা নবনির্মাণ করেছে, তারই ভাষ্য এই গ্রন্থ। কিছু দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্র এই গ্রন্থের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে। রবীন্দ্রনাথের প্রতি গবেষকের ব্যাক্তিগত অনুরাগ এবং অধ্যয়নের প্রতিশ্রুতির স্মারক এই গ্রন্থ। এটি যে পূর্ণাঙ্গ গবেষণাগ্রন্থ সেই দাবি না করেও বলা যায় যে, এই গ্রন্থে বাংলাদেশের রবীন্দ্রগবেষণায় একটি নতুন দৃষ্টিকোণের প্রকাশ ঘটেছে। বইটি পাঠকপ্রিয় হবে বলে প্রত্যাশা করি।
তপন বাগচী জন্ম: ২৩ অক্টোবর ১৯৬৮; কদমবাড়ি (মাতুলালয়) মাদারীপুর; পিতা তুষ্টচরণ বাগচী; মাতা জ্যোতির্ময়ী বাগচী। শিক্ষা: গণযােগাযােগ ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ও ফোকলাের বিষয়ে পিএইচডি । তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, যােগাযােগবিদ ও ফোকলােরবিদ।। উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ: বুকের ভেতর বসত করে (২০১৪)-সহ সাতটি কাব্যগ্রন্থ; ছন্দোবদ্ধ ভাবের পদ্য (২০১২)-সহ এগারােটি ছড়া ও কিশাের গল্পগ্রন্থ; সাহিত্যের এদিক সেদিক (২০১৩), রবীন্দ্রনাথ ও বৌদ্ধ আখ্যান (২০১২), লালন মতুয়া লােকসংগীত সন্ধান (২০১২), যাত্রাগান: জনমাধ্যম ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত (২০০৭), মুক্তিযুদ্ধে গােপালগঞ্জ (২০০৭), রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ: চন্দ্রাহত অভিমান (২০০২)-সহ একুশটি প্রবন্ধ গ্রন্থ; পুরস্কার ও স্বীকৃতি:: স্টান্ডার্ড চার্টার্ড দ্য ডেইলি স্টার সেলিব্রটিং লাইফ লিরিক এওয়ার্ড (গান, ২০১৪ ও ২০১৩), সাংস্কৃতিক খবর পদক (কবিতা, কলকাতা, ২০১৩), মহাকবি মাইকেল মধুসূদন পদক (প্রবন্ধ, ২০১২), অমলেন্দু বিশ্বাস স্মৃতি পদক (লােকসংস্কৃতি, ২০০৮), জসীমউদ্দীন গবেষণা পুরস্কার (প্রবন্ধ, ১৯৯৬), মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার (প্রবন্ধ, ১৯৯১)-সহ আঠারােটি পুরস্কার ও স্বীকৃতি লাভ করেন। পেশা: উপপরিচালক, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ উপবিভাগ, বাংলা একাডেমি ।।