প্রেম-ভালবাসা মানব-জীবনের একটি প্রকৃতিগত ব্যাপার। নারী-পুরুষের মাঝে কেবল স্বামী-স্ত্রীর প্রেমই স্বাভাবিক ও সর্বৈবভাবে বৈধ। পক্ষান্তরে বিবাহ-বহির্ভূত প্রণয় সৃষ্টিকর্তার বিধান ও সামাজিক নৈতিকতার বিধানে অবৈধ। অবিবাহিত যুবক-যুবতীর মাঝে প্রেম যতটা অবৈধ, তার থেকে অনেক বেশি অবৈধ বিবাহিত নারী-পুরুষের মাঝে প্রেম। আর সেই জন্য ইসলামী বিধানে অবিবাহিত ব্যভিচারী নারী-পুরষের শাস্তি হল একশত বেত্রাঘাত, কিন্তু বিবাহিতের আছে মৃত্যুদণ্ড। প্রেম সৃষ্টির নানা কারণ আছে, নানা মাধ্যম আছে। কিঞ্চিৎ কারণেই প্রেম সৃষ্টি হয়, প্রেমিকের কোন একটা বিষয় ভাল লেগে গেলেই ভালবাসা সৃষ্টি হয়, ভাল ভাষা থেকেও ভালবাসা জন্ম নেয়। অবাধ মেলামেশা ও দেখা-সাক্ষাৎ প্রেম আনয়ন করে। বর্তমান যুগের মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট অবৈধ প্রেমিক-প্রেমিকাদের সুন্দর মাধ্যম। তাগূতী আইন অবৈধ প্রেমে উৎসাহ দেয়। প্রচারমাধ্যমগুলি তাতে সহযোগিতা করে। মহা সমারোহে পালিত হয় বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। যে সকল কিশোর-কিশোরীরা প্রেমের উন্মাদ ও মত্ততার সাথে পরিচিত নয়, তারা অপরের দেখে শেখে, প্রেমের উপন্যাস পড়ে শেখে, ফিল্ম দেখে শেখে। কেউ শেখে, অবৈধ প্রেম করা ভাল নয়। কেউ শেখে প্রেম করার নানা পদ্ধতি। যার যেমন মতি, তার তেমন গতি। ভাল মানুষও অবৈধ প্রেমে পড়তে পারে। আল্লাহর ভয় না থাকলে আল্লাহর ঘর থেকেও প্রেমের বাঁশি বাজাতে পারে। যে যুগে মোবাইল-ইন্টারনেট ছিল না, সে যুগের প্রেম কেবল চিঠি-পত্র ও সাক্ষাতের উপর নির্ভরশীল ছিল। ফলে তা সীমিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা অসীম ও দুর্দম। আর তার জন্যই বেড়েছে নানা অশান্তি, সে কথা পত্র-পত্রিকায় প্রায় প্রত্যহই নজরে পড়ে। প্রেম মহাবীর বিশ্ববিজয়ী। সামাজিক বাধা, সংযম ও বিশ্বাসের বেড়া ডিঙিয়েও জয়লাভ তথা ছয়লাব করে। স্ত্রীর প্রতি অতিরিক্ত বিশ্বাস রেখে বিশ্বস্ত ও পরহেযগার বন্ধু বা প্রাইভেট মাস্টারের সাথে অবাধ মেলামেশার সুযোগ দেয় স্বামী। অতঃপর তিন পক্ষই আমানতের খিয়ানত করে। সাজানো বাগান উজাড় ক'রে দেয় অবৈধ প্রেমের নাগ-নাগিনী। আমার এ লেখাটি ১৯৮১ সালের, যখন আমি মহিষাডহরীর ছাত্র। অবৈধ প্রণয়-ঘটিত নানা অশান্তি সৃষ্টি ও সুখের সংসারে আগুন লাগা দেখে লিখেছিলাম। উদ্দেশ্য সতর্ক করা। আশা করি জ্ঞানীগণ সেইভাবেই গ্রহণ করবেন।