মুসলিম মননে নিয়মানুবর্তিতা ও সময়ানুবর্তিতা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বাণী—‘আল্লাহ মানুষকে তাদের কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দিলে পৃথিবীর কোনো জীবজন্তুকেই রেহাই দিতেন না; কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত তাদের অবকাশ দিয়ে থাকেন। তারপর তাদের সময় পূর্ণ হলে তারা জানতে পারবে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি লক্ষ রাখছেন। ’ অথচ বাস্তবতা হলো—‘মাথায় চুল পাকিতেছে, মুখের দাঁত নড়ে গেছে, চোখের জ্যোতি কমেছে, মনে ভাবি চশমা লই, কমিতেছি তিলে তিলে, ছেলেরা মুরুব্বি বলে, ভবের জনম গেল বিফলে, এখন সেই ভাবনায় রই...। ’ পবিত্র কোরআনে মানবজীবন সম্পর্কে ঘোষণা—‘তিনি (আল্লাহ) মৃত্যু ও জীবনকে সৃষ্টি করেছেন, কে সত্কর্ম করে তা পরীক্ষা করার জন্য। প্রিয় পাঠক, আমাদের অবস্থা এমন আমরা বড়দের অনুসরণ করতে ভুলে গেছি। একজন মুমিনের ভাবনা কেমন হওয়া চাই তা আমরা ভুলে বসেছি। অথচ আমাদের অবস্থা এমন হওয়া উচিত্ ছিল-প্রতিটি পদক্ষেপে বড়দের অনুসরণ করে চলার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমাদের সময় হয় না। আমরা দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। আপনাদের সমীপে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্ঠা ‘মুমিনের ভাবনা যেমন’ আশা করি প্রতিটি পথ ভোলা অন্তর আলোর দিশা খুঁজে পাবে ইনশা আল্লাহ
প্রখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী শুধু ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে বই রচনা করেননি, তিনি একাধারে ইসলামি ফিকহ, হাদীস, তাসাউফ ও ইসলামি অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ। আর তা-ই নয়, তিনি একজন বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শরীয়াহ আদালতে, এমনকি পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের শরীয়াহ আপিল বেঞ্চেরও বিচারক পদে আসীন ছিলেন। মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে ১৯৪৩ সালের ৫ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান দুটি আলাদা রাষ্ট্রে পরিণত হলে তার পরিবার পাকিস্তানে চলে আসে এবং এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। শিক্ষাজীবনে তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে ইসলামি নানা বিষয়সহ অন্যান্য বিষয়েও শিক্ষা নিয়েছেন। তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন, যেখান থেকে অর্থনীতি, আইনশাস্ত্র ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করেন। আর পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেছেন আরবি ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ. ডিগ্রি। দারুল উলুম করাচি থেকে পিএইচডি সমমানের ডিগ্রি অর্জন করেছেন ইসলামি ফিকহ ও ফতোয়ার উপর। সর্বোচ্চ স্তরের দাওয়া হাদিসের শিক্ষাও তিনি একই প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ করেন। বিচারকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও বিভিন্ন ইসলামি বিষয়, যেমন- ফিকহ, ইসলামি অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আন্তর্জাতিক ফিকহ একাডেমির স্থায়ী সদস্যপদ রয়েছে তাঁর। পাকিস্তানে 'মিজান ব্যাংক' নামক ইসলামি ব্যাংকিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পাকিস্তানে ইসলামি অর্থনীতির প্রসারে তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য বইও। তকী উসমানীর বই এর সংখ্যা ৬০ এর অধিক। শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী এর বই সমূহ রচিত হয়েছে ইংরেজি, আরবি ও উর্দু ভাষায়। শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'Easy Good Deeds', 'Spiritual Discourses', 'What is Christianity?', 'Radiant Prayers' ইত্যাদি ইংরেজি বই, ও 'তাবসেরে', 'দুনিয়া মেরে আগে', 'আসান নেকিয়া' ইত্যাদি উর্দু বই উল্লেখযোগ্য। এসকল বই ইসলাম প্রসারে, এবং বিভিন্ন ইসলামি ব্যাখ্যা প্রদান ও আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।