"শেখ মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” বইয়ের ভূমিকার থেকে নেয়া: ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং কর্মপদ্ধতি যারা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন তাঁরা সকলেই আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, ভারতের প্রতি কখনও তাঁর বিশেষ পক্ষপাতিত্ব বা দুর্বলতা ছিল না। তিনি জানতেন ভারতের সহযােগিতা ছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন করা সম্ভব নয়, এর জন্য মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েছেন এবং ভারতের চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতিও তিনি সত্তরের ফেব্রুয়ারিতে আদায় করেছিলেন, তারপরও ভারতের সহযােগিতার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণ সন্দেহমুক্ত ছিলেন না। '৬৬ সালে তার গােপন দিল্লী মিশন ব্যর্থ হওয়ার ঘটনাই প্রধানত এর জন্য দায়ী। আওয়ামী লীগ হাইকমাণ্ড এবং তাঁর বিশ্বস্ত ছাত্র-যুব নেতাদের তিনি ভারত যাওয়ার নির্দেশ দিয়েও নিজে এ কারণেই থেকে গিয়েছিলেন তিনি ভেবেছিলেন যদি ভারত প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে তাহলে তাকে বিশ্ববাসীর কাছে চিহ্নিত হতে হবে একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে। যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তিনি এক সময় বন্ধু ভাবাপন্ন ছিলেন তাদের রাষ্ট্রদূত যখন তাঁকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছিল মার্কিন সরকার কোনও অবস্থায় পাকিস্তান ভাঙার কোনও পদক্ষেপ অনুমােদন করবে না তখন তাঁকে আন্তর্জতিক জনমত সম্পর্কে অধিকতর সতর্কতার সঙ্গে ভাবতে হয়েছে। নিশ্চিত মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে তিনি পাকিস্তানী সামরিক জান্তার গ্রেফতার বরণ করেছিলেন এটা ভেবে যে, কোনও কারণে যদি সৈয়দ নজরুল, তাজউদ্দিন বা শেখ মনি, রাজ্জাক, তােফায়েলদের মিশন ব্যর্থ হয় পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আলােচনার পথ তাঁর সামনে খােলা থাকবে।
শাহরিয়ার কবির বাংলাদেশের একজন খ্যাতিনামা লেখক, সাংবাদিক, ডকুমেন্টরী চলচ্চিত্র নির্মাতা। ১৯৫০ খ্রীস্টাব্দের ২০ নভেম্বর তিনি ফেনীতে জন্মগ্রহণ করেন। লেখক হিসাবে তার প্রধান পরিচয় তিনি একজন শিশুসাহিত্যিক। তার নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রের মধ্যে জিহাদের প্রতিকৃতি অন্যতম।১৯৯২ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির বিরূদ্ধে কাজ করে চলেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করে শাহরিয়ার কবির ১৯৭২ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় সাংবাদিক হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৯২ সাল পর্যন্ত নির্বাহী সম্পাদক পদে থাকেন। তিনি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এর সাথে যুক্ত আছেন। শাহরিয়ার কবির বলেনঃ“ মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধ্বংস করা যায় না। বাংলাদেশে অধিকাংশ সময় নেতৃত্ব দিয়েছে ৭১’র পরাজিত শক্তি। তারা মুক্তিযুদ্ধের সব কিছু ধ্বংস করতে চেয়েছে কিন্তু পারেনি। তিনি বলেন, দেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। মহাজোট সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করেছে। আমরা বিশ্বাস করি ২০১৩ সালের মধ্যে শীর্ষ স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সম্ভব হবে।