রাতে সবাই একসাথে খাবার খেতে বসে। সুফিয়ান সাহেব মুখটা বেশ ভার করে রেখেছেন। নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করে চলেছেন কথাটা সবাইকে জানাবেন কি না? খাওয়ার গতিও স্লথ হয়ে যায় তখন। সবার চোখের দিকেও তাকিয়ে থাকতে পারছে না। হাজারো বিপদ এসে চেপে ধরলেও কখনো তিনি ভেঙে পড়েন না। সিদ্ধান্ত নিতেও ভুল করেন না। কিন্তু সততার পুরস্কার যে এ রকমভাবে পাবে তা কল্পনাও করেন নি তিনি। তবে গোপন রাখাতে ঘটনাটা তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে প্রতিনিয়ত। একপ্রকার অপরাধবোধেও ভুগছে সেই থেকে। শেষমেষ মনকে স্থির করল সবাইকে কথাটা বলা উচিত! আগে চারদিকে তাকিয়ে দেখে নিল নুসরাত, তাহসিন আর রাতুলের খাওয়া শেষ হল কি না! বিধবা মা রাশেদার আগেই খাওয়া হয়ে গেছে দেখে ভেবে নিল এখন বলা যায়। বলতে যাচ্ছিল এমন সময় নাসিমা বেগম বেশ উৎকণ্ঠার সাথে স্বামীর মুখপানে চেয়ে থেকে বলল কী গো! তোমার কী হয়েছে? এমন মুখটা পানসে হয়ে গেছে কেন? কিছুদিন থেকে ভারাক্রান্তও মনে হচ্ছে তোমাকে। কিছু হয়েছে কী? সুফিয়ান সাহেব আর চেপে রাখলেন না। মনের ভেতর কথাগুলো গুছিয়ে নিয়ে একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে বুকটা হালকা করার বৃথা চেষ্টা করলেন। বুঝতে পারলেন চেপে রাখা কষ্টগুলো বাঁধনমুক্ত না করলে বুকটা হালকা হবে না। পারিবারিক আলোচনা করা সুফিয়ানের এক প্রকার অভ্যেসে দাঁড়িয়েছে! তিনি মনে করেন এতে পরিবারের কর্তা হিসেবে সকলকে মূল্যায়নও করা হয় এবং যে কোনো কাজ করা বা সমস্যা সহজে মিটিয়েও ফেলা যায়। যেমন ভাবা তেমন কাজ। বললেন তোমরা হাত ধুয়ে এসে আবার বসে পড়। জরুরি কথা আছে!