নদী আর নৌকার দেশ বাংলাদেশ। আমাদের নদীর নাম পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, গোমতী, কর্ণফুলী, সুরমা, কুশিয়ারা, মহানন্দা, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী, কীর্তনখোলা, কীর্তিনাশা, আগুনমুখা, ইছামতি, তিস্তা, করতোয়া, লবঙ্গবতী, চিত্রা আরও কত কী! নৌকার নাম ডিঙি, পানসি, পাটাম, সাম্পান, গয়না, পলওয়ার, হোলা, কোশা, ঘাসী, ছিপ, সরঙ্গা, বজরা ইত্যাদি। নদীর নামের মতো আমাদের নৌকার নামেও বৈচিত্র্যের শেষ নেই। এক সময় তের'শ নদীর দেশের মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল নৌকা। শুধু যাতায়াত বা যোগাযোগের কথাই বা বলি কেন। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও নদীপথ আর নৌকার ওপরই নির্ভরশীল ছিল। আজ আমাদের তের'শ নদীও নেই- নানান আকারের নানান নকশার নৌকাও নেই। সারি সারি নানা রঙের পাল তোলা নৌকার দৃশ্য এখন শুধু ছবিতেই দেখা সম্ভব। স্বনামধন্য আলোকচিত্রী ও লেখক এম এ তাহের দেশের নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে ক্যামেরায় বন্দি করেছেন নানা ধরন আর আকৃতির নৌকা। তাঁর সেসব আলোকচিত্র নিয়ে প্রকাশিত হলো 'বাংলাদেশের নৌকা'। 'বাংলাদেশের নৌকা' গ্রন্থে যে সব নৌকার আলোকচিত্র আমরা দেখতে পাই তার অধিকাংশই বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম আর কতদিন দেখবে জানি না। এম এ তাহের ও তাঁর মতো অন্য যারা নদী ও নৌকার আলোকচিত্র তুলেছেন- তাঁদের তোলা আলোকচিত্রই এক সময় নদী ও নৌকা চেনার উপাত্ত হয়ে উঠবে। 'বাংলাদেশের নৌকা' গ্রন্থটির প্রকাশে প্রয়াত চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর কাছে অনেক ঋণ। তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।