পার্থিব জগত ও তার ভোগ-বিলাসে ডুবে গিয়ে মানুষ যেন মহাপ্রলয় ও প্রলয়-পরবর্তী অন্তহীন জীবনের মহাসত্যটি ভুলে না যায়, আখেরাতে কল্যাণ লাভের আমল ছেড়ে না দেয়, তার জন্য আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের বহু আগেই কতগুলো আলামত নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যা আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ বহন করে এবং এ বিষয়ে সকল সন্দেহ দূর করে দেয়। একজন মুসলমানের অন্তরে যদি পরকালের সুদৃঢ় বিশ্বাস জাগরুক থাকে, তবে তার জীবনের গতিপথ অবশ্যই সরল রেখায় থাকবে এবং তার অপরাধ-প্রবণতায় এমনিতেই লাগাম পড়ে যাবে। বস্তুত কেয়ামতের আলামতগুলোর ব্যাপক চর্চার বড় স্বার্থকতা এখানেই। প্রকৃতির একটি অমোঘ নিয়ম হল, বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সব কিছুই তার স্বাভাবিকতা হারিয়ে ক্ষয় হতে থাকে। তাই পৃথিবী যত বুড়িয়ে যাবে, ততই এর নিয়মনীতি বিঘ্নিত হতে থাকবে। পরিবর্তন আসতে থাকবে তার শৃঙ্খলায়। পৃথিবীর এই পতনমুখী পরিবর্তন ও বিবর্তনকেই পরিভাষায় 'ফিতনাহ' বহুবচনে ফিতান বলা হয়ে থাকে। তাসবীহের সূতো ছিড়ে দিলে যেভাবে তার দানাগুলো একের পর এক পড়তে থাকে, দুনিয়ার বার্ধক্যের সময় ফিতানের আবির্ভাবও সেভাবেই ঘটতে থাকবে। রাসূলুল্লাহ সা. অসংখ্য হাদীসে ফিতান ও কেয়ামতের পূর্বে সংঘ- টিতব্য অনেক বিষয় বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন। ইসলামের মহামনী- ষীগণ রাসুলুল্লাহ সা. এর এজাতীয় ভাষ্যের সংকলন উম্মাহর কাছে পৌছিয়ে দিয়েছেন পরম যত্নের সাথে। আমাদের আলোচ্য গ্রন্থটি তারই ধারাবাহিকতা মাত্র।
মুহাম্মদ ইউসুফ লুধিয়ানভি (১৯৩২ – ২০০০) ছিলেন একজন পাকিস্তানি সুন্নি মুসলিম পণ্ডিত, লেখক, মুহাদ্দিস, মজলিস-ই-আহরার-ই-ইসলামের নেতা, এবং আলমি মজলিস তাহাফ্ফুজ খতমে নবুওয়াতের সহসভাপতি। তিনি ভারতের পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের লুধিয়ানায় জন্মগ্রহণ করেন।