ট্রানসিলভানিয়ার এক অভিজাত ব্যক্তি বাড়ি কিনতে চান লন্ডনে। সেই সংক্রান্ত কাজে সেখানে পাঠানো হয় তরুণ আইনজীবী জোনাথন হারকারকে। দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে ট্রানসিলভানিয়ায় উপস্থিত হওয়ার পথে নানা রহস্যময় বিষয় প্রত্যক্ষ করে জোনাথন হারকার। সত্যিই কি কোনো এক অলৌকিক শক্তি আছে সবকিছুর পেছনে? নাকি পুরোটাই ইউরোপের পিছিয়ে থাকা অঞ্চলের কুসংস্কার? কাউন্ট ড্রাকুলার প্রাসাদে ঘটে চলেছে একের পর এক অঘটন। নেপথ্যে কে? ড্রাকুলা কি সত্যিই রক্ত-মাংসের মানুষ, নাকি অন্য কিছু?-উত্তর খুঁজতে গিয়ে জোনাথন জড়িয়ে পড়লো এক কুটিল জালে। মিনার বান্ধবী লুসির সাথে ঘটে চলেছে ভয়াবহ সব দুর্ঘটনা। রাতের আঁধারে কোন অশুভ ইঙ্গিত তাড়া করে বেড়ায় তাকে? উন্মাদ রেনফিল্ডের চিকিৎসা করছে মনোবিজ্ঞানী ডাক্তার সেওয়ার্ড। কোন অদৃশ্য সত্তার পূজায় নিজেকে নিয়োজিত করেছে রেনফিল্ড? দ্য ডেইলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রকাশিত হলো এক অদ্ভুত খবর। ডিমেটার জাহাজের কর্মীদের রহস্যজনকভাবে হত্যা করেছে কেউ। কে সে? হ্যাম্পস্টেডের শিশুরা হঠাৎ রক্তশূন্য হয়ে ঢলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে। রাতের অন্ধকারে কবরখানায় ঘুরে বেড়ানো রহস্যময়ীর সঙ্গে ওদের মৃত্যুর কি কোনো যোগসূত্র আছে? নিজের অভিজ্ঞতা আর জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করেছেন প্রফেসর ভ্যান হেলসিং। বুঝতে পেরেছেন, এক অতিপ্রাকৃত ছায়া নেমে এসেছে ইংল্যান্ডের বুকে। কিন্তু সেই অপচ্ছায়াকে কি থামাতে পারবেন তিনি? জানতে হলে পড়ুন, ব্রাম স্টোকারের কালজয়ী উপন্যাস 'ড্রাকুলা'। পৃথিবীর সফলতম পিশাচ কাহিনিটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাংলাদেশি অনুবাদ।
ব্রাম স্টোকার পুরাে নাম আব্রহাম ব্রাম স্টোকার। আইরিশ এই উপন্যাসিক ও গল্পকার গােটা পৃথিবীর কাছে বিখ্যাত। ড্রাকুলা'র লেখক হিসাবে। জন্ম ১৮৪৭ সালের ৮ই নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে।। ছােটোবেলায় দীর্ঘকাল কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে। শয্যাশায়ী ছিলেন। মায়ের কাছে নানান রূপকথা আর কিংবদন্তি শুনে মূলত ভৌতিক সাহিত্যে আগ্রহ জাগে। তার। ১৮৭৫ সালে প্রকাশিত হয় উনার প্রথম উপন্যাস। ‘দ্য প্রিমরােজ প্যাথ'। পঞ্চদশ শতকের ওয়ালাচিয়ার। আলােচিত-সমালােচিত রাজকুমার ভাদ তেপস। ড্রাকুলা বা ভাদ দ্য ইম্পেলারকে নিয়ে যুবক বয়স। থেকেই প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল তার। জে. সারিভন লে। ফানুর ‘কামিলা' পড়ে সর্বপ্রথম ভ্যাম্পায়ার ফিকশন। লেখার ইচ্ছা জাগে তার মনে।। ১৮৯৭ সালে প্রকাশিত হয় উনার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস 'ড্রাকুলা' যেখানকার প্রধান চরিত্রটিকে তিনি। গড়ে তুলেছিলেন ভাদ দ্য ইম্পেলারের অনুকরণে। যদিও শুরুতে বইটি তেমন সাড়া ফেলেনি। ব্রামের মৃত্যুর কিছু বছর পর এই গ্রন্থটির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে এবং একসময় বিশেষজ্ঞরা এটিকে কালজয়ী। গ্রন্থ হিসাবে মেনে নেন। অতিপ্রাকৃত সাহিত্যেও সবচেয়ে বিখ্যাত বই এটিই। প্রায় এক ডজন বইয়ের লেখক তিনি, তবে ড্রাকুলার। আকাশছােয়া জনপ্রিয়তার কারণে সেগুলাে নিয়ে আর। তেমন আলোচনা হয় না। তবে উনার ‘দ্য লেডি অফ। দ্য শ্রাউড', 'দ্য মিস্ট্রি অফ দ্য সি’, ‘দ্য স্নেকস পাস বইগুলাে কাল্ট ক্লাসিকের মর্যাদা পেয়েছে। এছাড়া ‘দ্য জুয়েল অফ সেভেন স্টারস’ আর ‘দ্য লেয়ার অফ। দ্য হােয়াইট ওয়ার্ম' উপন্যাস দুটিও পঞ্চাশের দশকের। পর মোটামুটি জনপ্রিয়তা পায়।। ১৯১২ সালের ২০শে এপ্রিল ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান হরর সাহিত্যের এই মহান লেখক।