ধর্মগ্রন্থ হিসেবে আল-কুরআনের বাণী চিরন্তন সর্বজ্ঞানসম্পন্ন; কিন্তু যুগে যুগে আল-কুরআনের মগ্নপাঠের প্রয়োজন রয়েই যায়; কারণ, আরবি ও বাংলা ভাষার বাক্যগঠনরীতি, বাক্ভঙ্গি, উপমা- উৎপ্রেক্ষা-রূপক ব্যবহারের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাছাড়া আল-কুরআনের ভাষা ধ্রুপদী আরবি, বচনবিন্যাসপ্রণালি সুনিপুণ, শব্দ অমৃতকণা, অলংকার মাধুর্য মধুরতায় ভরপুর, অনুপমেয়। ফলে আক্ষরিক বঙ্গানুবাদে আল-কুরআনের নিদর্শনসমূহের মর্মার্থে পৌঁছানো কঠিন। তবে আল-কুরআনে বারবার তার নিদর্শনসমূহের অর্থ উপলব্ধি এবং হৃদয়ঙ্গম করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তাই এই মহাগ্রন্থের একটি অধ্যায়ের (সুরার) মূলানুগ মগ্নপাঠের চেষ্টা করা হয়েছে। মগ্নপাঠে গিরিশচন্দ্র সেন, মোহাম্মদ আকরম খাঁ, আবুল ফজল, কাজী আবদুল ওদুদ, ডক্টর ওসমান গণী প্রমুখের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল আল-কুরআনের আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ বঙ্গানুবাদের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। আল-কুরআনের সর্ববৃহৎ অধ্যায় : সুরা বাকারাহ। আল-কুরআনের দীর্ঘতম নিদর্শন আয়াতুল-দাইন (২৮২) এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শন আয়াতুল-কুরসি (২৫৫)। আয়াতুল কুরসিতে (২৫৫) আল্লাহর একত্ববাদ, মর্যাদা ও গুণের বর্ণনা করা হয়েছে; অর্থাৎ আল্লাহ বিশ্বপ্রতিপালক; তিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের একমাত্র স্বত্বাধিকারী; তাঁর উপস্থিতি স্বর্গমর্ত্যব্যাপী। প্রকৃতিতে তাঁর নির্দশন যে-ব্যক্তি অন্বেষণ করে, সেই ব্যক্তি উপলব্ধি করতে সক্ষম যে, আল্লাহর প্রজ্ঞা, কৃপা, শক্তি ও ন্যায়নীতি। তাই তাঁর অনুরাগী একাগ্রচিত্তে, বিনীত প্রার্থনায়, সম্পূর্ণরূপে স্থাপন করে আল্লাহর ওপর তার অবিচল বিশ্বাস।