"ভাষার ইতিবৃত্ত" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: একদিকে যেমন ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস’ অন্যদিকে তেমন ‘ভাষার ইতিবৃত্ত’। মনস্বী গবেষক-অধ্যাপক ও লেখক সুকুমার সেন এ-দুটি গ্রন্থেই চিরজীবী। তাঁর নিজের মুখেই শুনেছি আমরা ‘ভাষার ইতিবৃত্ত’ রচনার নেপথ্যবৃত্তান্ত। ‘দিনের পরে দিন যে গেল’ নামের দু-খণ্ডে প্রকাশিত যেআত্মজীবনী, সেখানেই লিপিবদ্ধ করে গেছেন সুকুমার সেন এ-বই রচনার ইতিহাস। একসময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা শব্দবিদ্যাও পড়ানোে হত ইংরেজী ভাষায়। যুবক সুকুমার সেন যখন অধ্যাপনায় এলেন, তখন তিনিই প্রথম বাংলা ভাষায় বাংলার ভাষাতত্ত্ব পড়ানাের সূচনা করেন। আর, ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবে, এই সময়ই তিনি লেখেন এই বই ; এই ভাষার ইতিবৃত্ত। ‘ভাষার ইতিবৃত্ত’ সুকুমার সেনের প্রথম বই নয়, কিন্তু ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে বাংলায় লেখা প্রথম বই। বাংলা ভাষার উদ্ভব, বিকাশ ও চরিত্রের কথাই শুধু এখানে শােনানাে হয়নি, বিভিন্ন দিক থেকে ভাষার বিশ্লেষণও এই অসাধারণ গ্রন্থে। ভাষাতত্ত্বের আলােচনা এক জায়গায় থেমে নেই। দৃষ্টিকোণেরও ব্যাপক বদল ঘটে গেছে। তবু পঞ্চাশ বছরেরও বেশী আগে প্রকাশিত এই গ্রন্থ সেকালে ছিল পথিকৃৎ, একালেও তার মূল্য হারায়নি।
Sukumar Sen-এর জন্ম : জানুয়ারি ১৯০০ সাল। কলকাতায়। বর্ধমান মিউনিসিপাল হাই ইংলিশ স্কুল থেকে ১৯১৭ সালে পাশ করেছেন প্রবেশিকা পরীক্ষা, মোহিনীমোহন মিশ্র মেডেল পেয়ে। আই-এ, বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে। সংস্কৃত, বাংলা ও গণিত তিন বিষয়ে লেটার। সংস্কৃত কলেজ থেকে সংস্কৃত অনার্সে বি-এ। কমপ্যারেটিভ ফিললজিতে এম-এ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোনার মেডেল। ১৯২৪-এ প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি। ১৯২৬-এ মোয়াট মেডেল। ১৯২৬-৩১ মৌলিক গবেষণা করে তিনবার গ্রিফিথ মেমোরিয়াল পুরস্কার ও দু-বার স্যার আশুতোষ মুখুজ্জে মেডেল পেয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার ১৯৩০ সাল থেকে, এর আগে অনারারি লেকচারার। ১৯৩৭-এ পি-এইচ-ডি.| ১৯৫৪-১৯৬৪ খয়রা অধ্যাপক। ১৯৫২তে ভাষাতত্ত্ব বিভাগের অধ্যক্ষ। ১৯৬৩তে রবীন্দ্র পুরস্কার। ১৯৮১-তে বিদ্যাসাগর পুরস্কার। এ-ছাড়াও আনন্দ পুরস্কার, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এর রামেন্দ্রসুন্দর স্মৃতি পুরস্কার। সরোজিনী মেডেল। এমন আরও বহু। বিশ্বভারতী দিয়েছেন ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়—ডি. লিট| নানা গ্রন্থ : ইংরেজীতে ও বাংলায়।