আমার লেখা কবিতা নিয়ে কিছু কথা একদিন আমার মনে হলো, আমি এতো যে কবিতা লিখছি তা কি দেশের মানুষের কোনো উপকারে আসবে, যদি না আসে তাহলে এতো কবিতা লেখে লাভ কি ? আমার কবিতার বইটি প্রকাশ হলে পাঠকরা টাকা দিয়ে কিনবে এবং সময় নিয়ে পড়বে, তার ভিতর যদি কিছু না থাকে তাহলে এই কবিতার বই পড়ে লাভ কি তাদের ? আমি একজন লেখক হিসাবে তা করতে পারি না। এমন অধিকার পাঠক আমাকে দেয়নি। সেই চিন্তা থেকে সিদ্ধান্ত নিলাম সব কবিতা থেকে বাছাই করে একটি মাত্র কবিতার বই পাঠকদের হাতে তুলে দিবো, সেই লক্ষ্য নিয়ে একদিন বসে গেলাম কম্পিউটারে, যে কবিতাটা পড়ি সেটাই আমার কাছে ভালো লাগে না, তাহলে পাঠকদের কাছে ভালো লাগবে কীভাবে? আবেগ দিয়ে সবকিছু হলেও সাহিত্য হয় না, এটা জাতির সম্পদ, সেই কারণে ভাবতে হবে খুব জটিলভাবে, এখানে ছাড় দেবার কিছু নেই। সেই চিন্তা থেকে কবিতা পড়ছি আর কাটছি, তিন চার দিন চলে গেলো, মাঝে মাঝে আমার স্ত্রী চা দিয়ে যাচ্ছে সাথে দুই একটা বিস্কুট। আমি জীবনে এতো সময় নিয়ে কম্পিউটারে বসে থাকিনি, আমাকে একবার প্রশ্ন করলো, কি ব্যাপার! তিন চারদিন ধরে দেখছি কম্পিউটার থেকে উঠছো না, কেনো? আমি তাকে সব কথা খুলে বলি, তখন সে বলল, কতগুলো কেটেছো কবিতা ! আমি বললাম দুই হাজারের মত হবে। অন্য কোনো ফাইলে আছে সেই কবিতাগুলো? আমি বললাম না, আমার এমন কথা শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ বসে থেকে উঠে বলল, এমন একটা সিদ্ধান্ত নেবার আগে আমাকে একবার জানাতে পারতে। উঠো, দেখি তোমার পাঠকদের জন্য আমি কিছু কবিতা বাছাই করে দিতে পারি কি-না। আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। আসলে তো তাই, আমার স্ত্রী সবগুলো কবিতা গুনে পেলো মাত্র একশো দশটি, সেই কবিতা থেকে ৫৮টি কবিতা নিয়ে একটি কবিতার বই প্রকাশ করলাম। জানি না কেমন হলো, সে বিচার পাঠকদের হাতে তুলে দিলাম। এই কবিতার বইটি আমার জীবনের শেষ কবিতার বই আর কোনো কবিতার বই বাজারে আসবে না। আমি চেয়েছি আমার মত করে লিখতে, সরল সোজা ভাষায়, যাতে পাঠক বুঝতে পারে, কোনো কঠিন শব্দ ব্যবহার করিনি, যাইনি বাংলা কবিতার তিনটি ছন্দের দিকে,(অক্ষরবৃত্ত মাত্রাবৃত্ত স্বরবৃত্ত) আমি চেয়েছি আমার মত করে লিখতে, যাকে বলে আমার মত করে একটি নতুন ভূবন তৈরী করতে। আর এই কারণে আমার এভাবে পথ চলা। পৃথিবীর সকল মানুষ সুখী হোক, ভালো থাকুন এমনটা প্রত্যাশা।