বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ৬ কোটিরও বেশি শিশু। শিশু কিশোরদের চিকিৎসা সম্বন্ধিত প্রয়োজনীয়তা যা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেকটাই আলাদা | শিশুদের জন্য উন্নত ও কার্যকরী চিকিৎসায়, সমাজ বা পরিবারের অন্য যেকোন ব্যক্তির মতই গুরুত্ব সহকারে, শিশুদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা মেটানো উচিত । পেডিয়াট্রিক একটি বিশেষ চিকিৎসা বিভাগ যেখানে, ভ্রুন থেকে শুরু করে কিশোর পর্যন্ত যেকোন বয়সী শিশু বা বাচ্চাদের চিকিৎসা করা হয় । পেডিয়াট্রিক বিভাগ অত্যন্ত দক্ষ চিকিৎসক দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। সুতরাং সদ্যজাত শিশু থেকে ১৬ বছর বয়সী (কিছু ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশী বয়সেরও হতে পারে) শিশুর, যেকোন চিকিৎসা সম্পর্কিত বিষয়ে সঠিক ও নিখুঁত জ্ঞান প্রয়োজন। আবার এটাও সত্য যে, শিশু চিকিৎসা বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের জন্য বাংলা ভাষায় নির্ভরযোগ্য বই এর ঘাটতি রয়েছে। এই ভাবনা থেকে পেডিয়াট্রিক বা শিশু বিভাগের অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিসহ চিকিৎসাশাস্ত্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলির সমন্বয়ে ‘শিশুরোগ চিকিৎসা ওষুধ’ বইটি রচিত হয়েছে। যাতে সদ্যজাত শিশু থেকে যেকোন বয়সী শিশুদের চিকিৎসা সফল ভাবে কার্যকর করা সম্ভব হয় । বইটি সম্পাদনা করেছেন ফার্মাসিস্ট মোঃ আল-আমিন। যিনি একাধারে ফার্মাসিস্ট, লেখক এবং গবেষক। লেখক বইটিকে সহজবোধ্য করার লক্ষ্যে যথাসম্ভব সহজ ও সাবলীল বাংলা ভাষায় চিকিৎসা বিষয়ক তথ্য উপাত্ত দিয়ে উপস্থাপন করেছেন।
মো: আল-আমিন ১৯৮৪ সালে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার কানুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৮ সালে বি.ফার্ম. ও ২০০৯ সালে এম.ফার্ম. ডিগ্রী অর্জন করেন। বাংলাদেশে প্রথম ফার্মাসিউটিক্যাল সাইন্সে গাইড বইয়ের প্রবর্তক হিসেবে তাঁর খ্যাতি সমাদৃত। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত দুটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি-পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লি. এবং ওরিয়ন ফার্মা. লি.-এর প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টে ছয় বছরের অধিক সময় ধরে তিনি কর্মরত ছিলেন। ২০১০ সালে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের জন্য 'AIM' নামে তাঁর প্রথম বইয়ের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সের উপর লিখিত সেই বইটি বাংলাদেশের হাজারো গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট এবং ফার্মেসি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অত্যন্ত প্রশংসিত হয়। সেই অনুপ্রেরণা তাঁর লেখনীর পথচলাকে মসৃণ করে। ফলশ্রুতিতে তাঁর হাতে মেডিকেল এবং ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সের উপর এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫ টির অধিক বই রচিত ও প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, তিনি Covid-19 চলাকালীন সময় ইমেরিটাস প্রফেসর ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহ'র 'Covid-19, Guideline Expert Insights Global Research' বইয়ের সহ-লেখক হিসেবে কাজ করেন। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে প্রথম তিনি-ই গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট ও ফার্মাসিউটিক্যাল সেলস ফোর্সদের জন্য "Al-Amin Pharmacy Professional Program (APPP)" নামে একটি ট্রেনিং একাডেমি সূচনা করেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের অনেক স্বনামধন্য ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে External Sales Trainer হিসেবেও হাজার হাজার ফার্মাসিউটিক্যাল সেলস ফোর্সদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত করেন। তিনি ২০১৬ সালে 'The Pharma 360' নামে একটি Medical Research Center প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানের কাজ মূলত ফার্মাসিউটিক্যাল ও মেডিকেল পাবলিকেশন, ফার্মা ও হেলথ ইন্ডাস্ট্রির সাথে প্রযুক্তির সমন্বয় সম্পর্কিত গবেষণা করা। বর্তমানে তিনি সেখানে গবেষক ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োজিত আছেন।