ছেলেবেলায় মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনতাম। গল্প শেষ হওয়ার আগেই ঘুমমাসি আমায় কোলে নিয়ে নিতো। তাই গল্পগুলোর সমাপ্তি অংশে পৌঁছাতে পারিনি। এর মাঝেই কখন যে গল্পের প্রেমে পড়ে যাই সুনির্দিষ্টভাবে বলা খুব কঠিন। তারপর পূর্ণিমা রাতে বাড়ির উঠোনে শীতলপাটিতে বসে চাচি-জেঠিদের কণ্ঠে শোনা হত হরেক রকম গল্প। সেই দিনগুলো ছিল আনন্দের। মানুষ কবে থেকে গল্প করে বা শোনে তার সঠিক ইতিহাস আজও জানা যায়নি । হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ গল্প করে গল্প বলে গল্প শোনে। আমার গল্প লেখার হাতেখড়ি ২০০৭ সালের শুরুর দিকে। জীবনের দ্বিতীয় গল্পটা লিখে যখন পুরস্কার পাই তখন মনে হয়েছিল গল্প লেখাটা চালিয়ে যাওয়া আমার জন্য অত্যাবশ্যক। এখানে বিশেষ নিরেট আনন্দ খুঁজে পাই । কবিতা যে আনন্দ দেয় না তা কিন্তু নয়। তবে আমার খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধের জায়গা গল্প । ‘মেঘ উড়ে যাওয়ার পর' বইটি আমার তৃতীয় গল্পগ্রন্থ। আঠারোটি গল্পই আমাদের জীবন থেকে নেয়া। গল্পগুলোতে উঠে এসেছে সামাজিক জীবনাচরণ, প্রেম, অভিঘাত অর্থাৎ সমাজবাস্তবতা। প্রতিটি গল্পে ভিন্ন-ভিন্ন বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বাস করি, পাঠক গল্পগুলো পাঠে নিখাদ আনন্দ পাবেন। সাহিত্যিক ও পাঠক মহলে বইটি সমাদৃত হলেই গল্প বলার পাঠশালায় আমার দৃঢ় অবস্থান তৈরি হবে বলে বিশ্বাস করি। বইটির অন্দরমহলে সকল পাঠককে প্রবেশের বিনীত অনুরোধ জানাই। ধন্যবাদ।