প্রাথমিক আলোচনা ইসলামে নারীর অবস্থান এবং তাদের অধিকার কী- এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা স্পষ্ট ও স্বচ্ছ নয়। অথচ এ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা অর্জন করা প্রত্যেকের জন্য অপরিহার্য, বিশেষ করে বর্তমান সময়ে। কারণ, অধুনা কিছুসংখ্যক লেখক ইসলামে নারীর অবস্থান ও তাদের অধিকার সম্পর্কে এমনসব কথা লিখছেন- যা পড়ে অনেক পাঠক বিভ্রান্ত হচ্ছেন। অনেকের মধ্যেই এমন ধারণা জন্ম নিচ্ছে যে, ইসলাম নারীদের মর্যাদা অনেকাংশে কমিয়ে দিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই হরণ করেছে তাদের অধিকার। এ জাতীয় কথা লেখার দুটি কারণ থাকতে পারে: ১. এ লেখকগণ ইসলাম সম্পর্কে বিদ্বেষ পোষণ করেন, ২. নারীর অবস্থান এবং অধিকার সম্পর্কে ইসলামের সঠিক বক্তব্য ও দৃষ্টিভঙ্গি তাদের কাছে সুস্পষ্ট নয়। অতএব, উক্ত বিষয়ে তথ্যভিত্তিক ইসলামের সঠিক ও নির্ভুল বক্তব্য আমাদের সামনে স্পষ্ট হওয়া দরকার। মূলত ইসলামের দৃষ্টিতে নারী ও পুরুষ একে অপরের বন্ধু, একে অপরের অংশ। ইসলাম কখনোই নারীকে পুরুষের সেবাদাসী হিসেবে মূল্যায়ন করে না। বিদায় হজ্জের ভাষণে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নারীর প্রতি পুরুষের যেমন অধিকার আছে, তেমনি রয়েছে পুরুষের প্রতি নারীর অধিকার। মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, 'নিশ্চয়ই নারীরা পুরুষদের মতোই পরস্পর ভ্রাতৃসুলভ মর্যাদার অধিকারী।' বর্তমান সমাজে ইসলামপ্রদত্ত অধিকার পুরুষরা যতটুকু ভোগ করছেন, নারীরা তাদের অধিকার অনেক ক্ষেত্রেই ততটুকু ভোগ করতে পারছেন না নিজেদের অজ্ঞতার কারণে। কিন্তু বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিষ্ঠিত সমাজে নারীরা ইসলামপ্রদত্ত অধিকার ও সুবিধাদি পূর্ণরূপে ভোগ করেছেন। যেখানেই তাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে, সেখানেই তারা তা সংরক্ষণের জন্য বুদ্ধিমত্তার সাথে চেষ্টা চালিয়েছেন। এ ব্যাপারে ইসলামী আইন তাদের চেষ্টা- সাধনাকে সফল করার ক্ষেত্রে পূর্ণ সহায়তা প্রদান করেছে। বর্তমান সমাজেও সে বেহেশতি পরিবেশ ফিরে আসুক, পুরুষদের মতো নারীরাও ইসলাম প্রদত্ত তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে তা ভোগ করুক, এ প্রত্যাশায় তাদের কিছু অধিকার সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করা হলো।